ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানির পাম্পটি উদ্বোধনের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধ্বসে পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে পাম্প হাউজ ঘরের মেঝের অনেকটা অংশ ধসে পড়েছে। দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। পানির লাইন স্বাভাবিক থাকলেও ভবনের নিচে সুড়ঙ্গ তৈরি হওয়ায় লাইনটিও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভা এলাকার নওদাগা পাড়ায়। এখানে সদ্য স্থাপিত পানির পাম্প ভবন ধ্বসে পড়ায় নির্মাণ কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। স্থানীয়রা বলছেন, গত রোববার (৪ জুলাই) দুপুরে পৌরসভার মেয়র মো. সহিদুজ্জামান সেলিম এই পাম্পের পানি সরবরাহ কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় পৌর মেয়রের সঙ্গে স্থানীয় ৯নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. রকিব উদ্দিনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু উদ্বোধনের পর দেখা গেলো পাম্প ভবনটি ধ্বসে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটচাঁদপুর পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ড নওদাগা ও কাশিপুর এলাকার নাগরিকদের জন্য গভীর নলকূপটি স্থাপন করা হয়। কোটচাঁদপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জিল্লুর রহমান জানান, পাম্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের শেষ দিকে। পানির লাইনের কাজ এজন্য প্রায় ৬০ লাখ আর ভবনের জন্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ করা হয়। কিন্তু কাজটি ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. রকিব উদ্দিন জানান, পাম্পটি তার নির্বাচনী এলাকায় বসানো হয়েছে। এই পাম্পের মাধ্যমে নওদাগা, কাশিপুর ও শহরের কিছু অংশের গ্রাহকরা পানি পাবেন। তিনি জানান, পাম্পটি এলাকার মানুষের কল্যাণে নির্মিত হলেও উদ্বোধনের পরই ধসে পড়ে। এতে পাম্পটি মানুষের উপকারে আসবে কিনা তা নিয়ে শংসয় দেখা দিয়েছে। নওদাগা গ্রামের মাহাতাব আলী জানান, দুই বছরের অধিক সময় ধরে এই পাম্পটি তৈরি করা হয়েছে। এরপর গত রোববার দুুপরে চালু করার পরদিনই দেখা যায় পাম্প ভবনের নিচের অংশ থেকে মাটি ধ্বসে পড়েছে। সেখানে সুড়ঙ্গ তৈরি হয়েছে। পাম্পের চালক কোটচাঁদপুর পৌরসভার কর্মচারী সাইদুল রহমান জানান, রোববার মেয়রসহ অন্যরা এসে এটি আনুষ্ঠানিক চালু করে যান। পরদিন সকালে এসে দেখেন মাটি ধসে যেতে শুরু করেছে। কোটচাঁদপুর পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা জানান, কাজটি দেখভাল করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। তারা মাঝে মধ্যে খোঁজখবর নিয়েছেন। এখন এই পরিস্থিতিতে তারা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বিভাগকে দ্রুত দেখার জন্য জানিয়েছেন। পৌরসভার মেয়র মো. সহিদুজ্জামান সেলিম জানিয়েছেন, ঠিকাদাররা এই কাজের বিল নিয়ে গেছেন। তারপরও তারা কাজটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলেছেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের স্থানীয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জিল্লুর রহমান জানান, তারা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা মেরামত করে দিতে সম্মত হয়েছেন।