স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জের ঠিকাদার কামাল হোসেন হত্যা মামলার খুনিদের বিচার ও ফাঁসির দাবীতে বাজারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে ফেস্টুন টানানো হয়েছে। গত সোমাবার মুন্সিগঞ্জ বাজারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কে বা কারা ফেস্টুনগুলো টাঙিয়ে দিয়ে যায়। ফেস্টুনে লেখা রয়েছে, সদ্য শহিদ মো. কামাল হোসেনের খুনিদের বিচার চাই, ফাঁসি চাই, জেহালার রাজাকার সিদ্দিক পরিবার হঠাও, জেহালা বাঁচাও, এই নৃশংস হত্যার বিচার চাই, জেহালা ইউপির সাবেক মেম্বারের খুনিদের ফাঁসি চাই, চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার শহিদ কামাল হোসেনের খুনিদের ফাসিঁ চাই। মুন্সিগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শহিদ কামাল হোসেনের খুনি রাজাকার সিদ্দিক হোসেন পরিবারের বিচার চাই। এরা সাধারণ জনগনের শত্রু। চিনে রাখুন, বিচার করুক আইন। এদেরকে ঘৃনা করতে শিখুন। শহিদ কামাল হোসেনের পরিবার ও শুভাকাক্সিক্ষদের নিরাপত্তা চাই, সন্ত্রাস খুনি হঠাও জেহালা গ্রাম বাঁচাও, খুনিদের ফাঁসি চাই, জেহালায় শান্তি চাই।
এছাড়া আরো লেখা আছে, মুক্তিযোদ্ধাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা জানেন ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ নং আসামির পিতা ও শ্বশুর এবং দাদা মো. সিদ্দিক হোসেন (তৎকালীন পাকিস্তান পিচ কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজাকার ছিলেন) আপনারা চিনে রাখুন, ঘৃণা করুন এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসার সাহায্য করুন। আবেদন ও প্রচারে ৭নং জেহালা ইউনিয়নবাসী দাবিতে একমত খুনিদের ফাসিঁ চাই। এছাড়া উক্ত মামলার আসামি স্বাধীন, রফিক, বিমান, স্বপন, সালাউদ্দিন, সাত্তার, ইসমত আরা, সাইমা নিগার, নাইমা নিগার, তোফাজ্জেল, তরিকুল, আব্দুল হালিম মোল্লা, বুলু, রাহুল মুচি, বাদশা, আব্দুল বারি ও চান্দু মোট ১৭ জনের ছবি দিয়ে ফেস্টুন টাঙানো রয়েছে।
উক্ত মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (ওসি অপারেশন) একরামুল হক বলেন, ঠিকাদার কামাল হোসেন হত্যা মামলার ১০ জন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুজন আসামি ইংল্যান্ডে রয়েছে। মামলার আসামি স্বাধীন, আশিক ও রাহুল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।
গত ১১ মে নিহত কামাল হোসেনর স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদি হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ১১ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে আর অনেকের অজ্ঞাত করে মামলা দায়ের করে। ঝিনাইদহ র্যাব ৬ ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের অভিযানে ১০ জন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপদ্য। এর মধ্যে তিন জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জমিনে মুক্ত হয়ে বাড়িতে ফেরে। এছাড়া দুই জন আসামি ইংল্যান্ডে রয়েছে।
উল্লেখ্য: নিহত কামাল হোসেন আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা গ্রামের মাঝের পাড়ার মৃত জাহান আলী মাস্টারের ছেলে ও বিএনপির নেতা ছিলেন। তিনি ঠিকাদারি কাজ করতেন। গত ৯ মে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে খুন হন তিনি। ওই দিন রাত ১০ টার দিকে ঠিকাদার কামাল হোসেন বাড়ির বাইরে বের হলে ক্লিনিকপাড়ায় স্বাধীনের শ্বশুরবাড়ির সামনে একা পেয়ে কামালকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে যান স্বাধীন। রাত ১২টার দিকে স্বাধীনের শ্বশুর বাড়ির সামনে থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় কামালকে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রতিজ্ঞা ক্লিনিকে নেয় স্থানীয়রা। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে সদর হাসপাতালে নেয়া হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।