আলমডাঙ্গা ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৫১ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় আলমডাঙ্গা নির্বাচন অফিসে এ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেমদ প্রার্থীদের হাতে প্রতীক তুলে দেন। নির্বাচনে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এমএজি মোস্তফা ফেরদৌস সার্বিক সহযোগিতা করেন। ফলে সকাল থেকেই উপজেলা নির্বাচন অফিস ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে কাক্সিক্ষত প্রতীক পেতে ভীড় জমান প্রার্থীরা। নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই আলমডাঙ্গা পৌর এলাকায় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা শুরু হয়েছে। পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৬ হাজার ১শ ৩৯জন ভোটার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমেমদ নির্বাচন কমিশনের দেয়া আচরণবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে প্রার্থীদের নির্দেশনা দেন। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী ২০ হাজার ভোটারের হারে একের অধিক এবং সর্বোচ্চ ৫টির অধিক নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করতে পরবেন না। সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে ১ এর অধিক নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করতে পারবেন না। কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী ১ এর অধিক নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করতে পারবেন না। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকে প্রচারণা চালানো যাবে। পথ অবরোধ করে কোনো পথসভা করা যাবে না। দেয়াল লিখন করা যাবে না। এসবের ব্যত্যয় ঘটলে আইন প্রয়োগ করা হবে বলে প্রার্থীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমেমদ।
আলমডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনীত দুজনসহ প্রার্থিতা করছেন তিনজন। তাদের মধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনবারের নির্বাচিত মেয়র হাসান কাদির গনু ২য় বারের মতো আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। গতকাল সকালে রিটার্নিং অফিসারের হাত থেকে দলীয় নৌকা প্রতীক গ্রহণ করেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দুবারের নির্বাচিত সাবেক মেয়র জেলা বিএনপির নির্বাহী সদস্য আলহাজ মীর মহিউদ্দিন। গতকাল সকাল ১০টার দিকে রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ গ্রহণ করেন তিনি। এছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাবেক পৌর চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী মোবাইল প্রতীক পেয়েছেন।
সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৩ ওয়ার্ডে ১২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন ৩জন। তাদের মধ্যে কল্পনা খাতুন পেয়েছেন চশমা, রুমা খাতুন জবা ফুল ও শিপ্রা বিশ^াস আনারস প্রতীক পেয়েছেন। ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। তাদের মধ্যে রাবেয়া খাতুন আনারস, রেখা খাতুন জবা ফুল, সুফিয়া খাতুন চশমা ও আয়েশা সিদ্দিকা বলপেন প্রতীক পেয়েছেন। ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রার্থিতা করছেন ৫জন। তাদের মধ্যে নুরজাহান খাতুন টেলিফোন, রীতা খাতুন জবা ফুল, রসিদা খাতুন দ্বিতল বাস, আরজিনা খাতুন আনারস ও মনোয়ারা খাতুন পেয়েছেন চশমা প্রতীক।
৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৬ প্রার্থী। ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫ প্রার্থীর মধ্যে আলাল উদ্দিনের প্রতীক পানির বোতল, মাসুদ রানা তুহিনের প্রতীক উটপাখি, শরীফুল ইসলামের প্রতীক টেবিল ল্যাম্প, নাহিদ হাসান তমালের প্রতীক পাঞ্জাবি ও মিকাইল হোসেন ডালিম প্রতীক পেয়েছেন। ২নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে দুজন প্রার্থীর মধ্যে কাজী আলী আজগর সাচ্চুর প্রতীক উটপাখি ও খন্দকার মজিবুল ইসলামের প্রতীক পানির বোতল। ৩নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে তিন প্রার্থীর মধ্যে জহুরুল ইসলাম স্বপনের প্রতীক টেবিল ল্যাম্প, দীনেশ কুমার বিশ^াসের প্রতীক উটপাখি ও নওশের আলীর প্রতীক পানির বোতল। ৪নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থিতা করছেন ৯জন। তার মধ্যে সদর উদ্দিন ভোলার প্রতীক ডালিম, শাহীন রেজার প্রতীক টেবিল ল্যাম্প, আকতারুজ্জামানের প্রতীক পাঞ্জাবি, ইলিয়াস হোসেনের প্রতীক স্ক্রু ড্রাইভার, আলম হোসেনের প্রতীক উটপাখি, কাজী হাবিবুর রহমানের প্রতীক ফাইল কেবিনেট, পরিমল কুমার ঘোষ কালুর প্রতীক পানির বোতল, বিমল কুমার বিশ^াসের প্রতীক ব্রিজ ও জয়নাল আবেদীনের প্রতীক ব্লাকবোর্ড। ৫নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে চার প্রার্থীর মধ্যে আব্দুল গাফফারের প্রতীক উটপাখি, সিরাজুল ইসলামের প্রতীক টেবিল ল্যাম্প, শহিদুল ইসলামের প্রতীক পানির বোতল ও মশিউর রহমানের প্রতীক ডালিম। ৬নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে চার প্রার্থীর মধ্যে রেজাউল হক তবার প্রতীক উটপাখি, ডালিম হোসেনের প্রতীক ডালিম, আবুল কাশেমের প্রতীক টেবিল ল্যাম্প ও লালন আলীর প্রতীক পানির বোতল। ৭নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে চার প্রার্থীর মধ্যে ফারুক হোসেনের প্রতীক টেবিল ল্যাম্প, বাপ্পির প্রতীক উটপাখি, শামীম আশরাফের প্রতীক পানির বোতল ও আসাদুল হকের প্রতীক ডালিম। ৮নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে তিন প্রার্থীর মধ্যে জাহিদুল ইসলামের প্রতীক উটপাখি, দেলোয়ার মোল্লার প্রতীক ডালিম ও আশরাফুল হোসেনের প্রতীক পানির বোতল। ৯নং দুই প্রার্থীর মধ্যে মামুন অর রশিদ হাসান পেয়েছেন টেবিল ল্যাম্প ও সাইফুল মুন্সি পেয়েছেন উটপাখি প্রতীক।
আলমডাঙ্গা পৌরসভা এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ২৬ হাজার ১শ ৩৯ জন। এর মধ্যে মহিলা ১৩ হাজার ৫৫৮ জন ও পুরুষ ১২ হাজার ৫৮১ জন। তারমধ্যে ১নং ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৮৩জন, ২নং ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৪৩৫জন, ৩নং ওয়ার্ডে ২ হাজার ৭১৭জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৩৪৪ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৩১৭ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৩ হাজার ২৩৭ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ২ হাজার ৬০২জন, ৮নং ওয়ার্ডে ২ হাজার ১০৪ জন এবং ৯নং ওয়ার্ডে ২ হাজার ৩শ জন।
এছাড়াও সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ২৩৫ জন। ৪, ৫ ও ৬নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ভোটার ৯ হাজার ৮৯৮জন। ৭, ৮ ও ৯নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ভোটার ৭ হাজার ৬জন।