আলমডাঙ্গা ব্যুরো: দীর্ঘ ১৭ বছর পর আলমডাঙ্গায় উপজেলা ও পৌর বিএনপির অফিস উদ্বোধন করা হয়েছে। ২২ জানুয়ারি বুধবার সকালে আলমডাঙ্গা প্রধান সড়কের অদূরে আলিফ উদ্দীন রোডে দলীয় এ অফিস বেশ সাড়ম্বরে উদ্বোধন করা হয়েছে। আগত দলীয় নেতাকর্মীরা করতালি আর মুর্হুমুহু শ্লোগান তুলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। ১৬ বছর পর বিএনপির এই জমায়েতে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। খুন গুমের রাণী শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে বিএনপি নেতাকর্মীরা আলমডাঙ্গায় স্বতস্ফুর্তভাবে বড় কোন সমাবেশ করতে পারেনি। সমাবেশ করতে গেলেই পুলিশ ও দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে পন্ড করে দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের সমাবেশ থেকে গ্রেফতার করে জেলে ঢোকানো হয়েছে। নাশকতার মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। উপজেলার বহু নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছেন। ডামোশের ডাক্তার খালেকের বিরুদ্ধে ২৭ মামলা, বোরহান মেম্বারের বিরুদ্ধে মামলার স্তুপ। প্রায় প্রতি গ্রামে এমন উদাহরণ আছে। অনেকেই হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে পিষ্ট হয়ে সম্পদ ও সংসার হারিয়েছেন। তাই মুক্ত পরিবেশে বিএনপির এই সমাবেশ বিএনপির জন্য একটি উজ্জীবনী শক্তি ও নতুন করে লড়াই সংগ্রাম করার প্রেরণা যোগাবে বলে অনেকের মন্তব্য।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শরীফুজ্জামান শরিফ বলেন, আমার সামনে যেসব নেতৃবৃন্দ উপস্থিত আছেন তারা সবাই বহুবছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির দায়িত্বে যখন শামসুজ্জামান দুদু ভাই ছিলেন তখনও উপস্থিত আপনারা বিএনপির দায়িত্ব পালন করেছেন। ওহিদুল ইসলাম বিশ্বাস যখন জেলা বিএনপির দায়িত্বে ছিলেন তখনও আপনারা স্থানীয় বিএনপির দায়িত্বে ছিলেন। আমি নিজে কাউকে নতুন করে বিএনপিতে আনিনি। অনেকেই আমার আগে থেকেই বিএনপির বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি এসময় আলমডাঙ্গা উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়নের নাম ও কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের নাম উচ্চারণ করে বলেন, এইসব নেতারা দুদু ভাই ও ওহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের করা কমিটিতেও ছিলেন।
শরীফ বিগত আওয়ামী দুঃশাসনকাল উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনে যখন কেউ চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির হাল ধরতে সাহস পাননি, তখন কেন্দ্রীয় বিএনপি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি দল গোছানোর চেষ্টা করেছি। অনেকেই বিএনপির খাতায় নাম লেখাতে সাহস পাননি। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। জেল জুলুম মাথায় নিয়ে পুরো জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন ঘুরে ঘুরে দলকে গুছিয়েছি। বিএনপিকে সুসংগঠিত করেছি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, শামসুজ্জামান দুদু ভাই অনেক বড় নেতা। তাকে আমি সম্মান করি। তিনি আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শহিদুল কাউনাইন টিলু, মজিবর রহমান ও শেখ সাইফুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে বলেন, এইসব নেতাদেরও আমি সম্মান করি। দলের জন্য তাদেরও অনেক অবদান আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নেতৃত্ব পরিবর্তন একটা চিরাচরিত নিয়ম। এই নিয়মের ধারাবাহিকতা সবাইকে মেনে নিতে হবে। অযথা দলের ভেতরে ভাঙন সৃষ্টি করা ঠিক না।
তিনি বর্তমান বাস্তবতা উল্লেখ করে বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন কঠিন চ্যালেঞ্জ আসছে। জাতীয় নির্বাচনে সবাইকে দরকার। কে নমিনেশন পাবেন এটা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের নীতিনির্ধারকেরা জানেন। তিনি দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেন, যদি শামসুজ্জামান দুদু ভাইকে নমিনেশন পান দল তার জন্য নির্বাচন করবে। নিজের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, দল যদি অন্য কাউকে নমিনেশন দেয় দল তার জন্য নির্বাচন করবে।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে দলের নীতিবহির্ভূত কাজ করলে সে যত বড় নেতাই হোক তার পদ থাকবে না। তিনি আলমডাঙ্গা বিএনপিতে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোন নেতা নেই বলেও উল্লেখ করেন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্বে¡ বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, চুয়াডাঙ্গা সদর পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু, চুয়াডাঙ্গা সদর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন, কৃষকদলের সদস্য সচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন। আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহাবুল হক মহাবুব, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুক্ত, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বকুল, জেলা যুবদলের গ্রাম বিষয়ক সম্পাদক ইকরামুল হক ইকরা, উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক জামাল সাদিক পিন্টু, সদস্য সচিব ডা. ইদ্রিসুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক হাজি মকবুল হোসেন, পৌর বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মহাবুল হক মাস্টার, আসিফ আল নুর তামিম, মকলেছুর রহমান মিলন, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজগর সাচ্চু, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বিশ^াস, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক রাশেদুল ইসলাম, পৌর কৃষকদলের সভাপতি মামুন, সদস্য সচিব প্রিন্স, ডাউকি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সম্পাদকের মধ্যে আবদার আলী, বুলবুল সিরাজি সালাম, আলম শাহ, পলাশ আহমেদ, আমজাদ হোসেন, কামাল হোসেন, আইনাল হক, আলমগীর হোসেন লালন, রফিকুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিক, আব্দুর রশিদ, আব্দুর রাজ্জাক রাজা, ইউপি চেয়ারম্যান মিনাজ উদ্দিন বিশ^াস, হারুন অর রশিদ, রাজিব ফেরদৌস পাপেন, মহসিন আলী, সেরেগুল ইসলাম, লালন মিয়া, সেলিম উদ্দিন, আইনাল হক, টিপু সুলতান, আতাউল হুদা, মনির উদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান বকুল, শুকুর আলী, সাহীদুদ্দোজা মিল্টন, আলাউদ্দিন খান, বোরহান উদ্দিন, শাহিন রেজা, পৌর মহিলা দলের আহ্বায়ক জিনিয়া পারভীন, পৌর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সম্পাদকের মধ্যে রহিদুল ইসলাম, ওহিদুল ইসলাম বাবু, হাফিজুর রহমান চমক, আব্দুল হক মিন্টু, আব্দুল জব্বার, লিপন, আবু সালেহ মাসুদ, আবু জাফর, আব্দুর রশিদ মালিথা, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, সাবেক কমিশনার আব্দুর রাজ্জাক, আজম আলী, বরকত আলী, আলতাফ হোসেন, আলিম উদ্দিন, আমিনুল হক নান্নু, মুন্সি আইয়ুব আলী, আরজান আলী, উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মীর আসাদুজ্জামান উজ্জ্বল, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম-আহ্বায়ক চৌধুরী জাহাঙ্গীর আলম বাবু, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন মোল্লা, সদস্য সচিব সাইফুদ্দিন কনক, চুয়াডাঙ্গা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুবেল হাসান, আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এমদাদ হোসেন, রাজু আহমেদ, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জাকারিয়া ইসলাম শান্ত, চুয়াডাঙ্গা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কৌশিক আহমেদ রানা, আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান শুভ, সদস্য সচিব আল ইমরান রাসেল, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিক হাসান রিংকু, সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান তন্ময়, আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম লিমনসহ আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৗর বিএনপির অঙ্গসংগঠনের সকল নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।