আজ নগর কীর্তন-ভোগ আরতি ও প্রসাদ বিতরণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে মহানামযজ্ঞ

ঢাকা থেকে পূজা উদযাপন কমিটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের যজ্ঞস্থল পরিদর্শন ও সন্তোষ প্রকাশ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা শহরের পান্না (রূপছায়া) সিনেমাহল প্রাঙ্গণে টানা পাঁচদিন ধরে চলছে মহানাম সংকীর্তন। ভক্ত অনুরাগী ও পূণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিলো পাঁচদিনের ১২তম ২৪ প্রহরব্যাপী শ্রী শ্রী তারকব্রহ্ম মহানামযজ্ঞ ও ৮ প্রহর ব্যাপী অষ্টকালীন লীলা কীর্তন। যা আজ ভোগ আরতি ও প্রসাদ বিতরণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার মহানাম সংকীর্তনের পঞ্চম দিনেও পার্শবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে আসে হাজার হাজার মানুষ। শেষ দিনেও পূণ্যার্থীদের ঢলে যজ্ঞস্থল জনসমুদ্রে পরিণত। পুলিশের পাশাপাশি, দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নিজস্ব সিকিউরিটি টিম ও মহানামযজ্ঞের স্বেচ্ছাসেবকদের হিমশিম অবস্থা হয়ে যায়। আর মহানাম সংকীর্তনের পাশাপাশি উন্মুক্ত ভক্তসেবা বা প্রসাদ (খাবার) বিতরণ কার্যক্রমেও বেশ ব্যস্ত দেখা যায় নোঙরখানার রাধুনী ও সেবকদের। একটানা পাঁচ দিনব্যাপী এই মহানামযজ্ঞানুষ্ঠান ও লীলা কীর্তন আজ ৩ নভেম্বর শুক্রবার সূর্যোদ্বয়ের প্রস্তাবিত যজ্ঞ বিশ্রাম, সকালে নগর কীর্তন, ১০টায় পদাবলী কীর্তন, মধ্যাহ্ন ভোগ, আরতি, প্রসাদ বিতরণ ও ভক্তসেবার মধ্যদিয়ে শেষ হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ দিনে মহানামযজ্ঞ পরিদর্শনে আসেন ঢাকা গুলশান ও বনানী পূজা উদযাপন কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী সুদাংশু কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রাণ কৃষ্ণ ঘোষ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ঢাকা বনানী পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য শ্রী বিনয় কৃষ্ণ পোদ্দার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের গীতিকার ও পরিচালক মনোজ সেন গুপ্তসহ কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ পুরো নামযজ্ঞ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দিলীপ কুমার আগরওয়ালার আতিথিয়েতা গ্রহণ করেন। এছাড়া শেষদিনে নামযজ্ঞ পরিদর্শনে আসেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সভাপতি নাজমুল হক স্বপন, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ, চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের ডিআইও-১ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান কাজল প্রমুখ। আগত অতিথিদের স্বাগত জানান দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানের আয়োজক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব তো সবার’ তাই তো দলমত ধর্ম নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ এই যজ্ঞে এসেছেন। যেটা সত্যিই ভালো লাগার বিষয়। আমি যেমন চুয়াডাঙ্গাকে ভালোবাসি, ঠিক তেমনি চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসী আমার সকল সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে সহযোগিতা করেন। তার প্রমাণ পাঁচদিনের যজ্ঞানুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ও সুশৃঙ্খলভাবে যজ্ঞ পরিদর্শনই প্রমাণ করেছে। তিনি আরও বলেন আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র একজন কর্মী হিসেবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গার গণমানুষের অনুরোধে এ জেলার উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করেছি। আর যতদিন বেঁচে থাকবো চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গাসহ এ জেলার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে তাদের কল্যাণেই কাজ করছি এবং করে যাবো। মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা’র বাবা ওম প্রকাশ আগরওয়ালা, ছোট ভাই পিণ্টু আগরওয়ালাসহ আগরওয়ালা পরিবারের সকল সদস্যরা উপস্থিত থেকে প্রার্থনা করেছেন। এই মহানামযজ্ঞানুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করছেন পবিত্র কুমার আগরওয়ালা ও নিরঞ্জন কুমার আগরওয়ালা। উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও তার পরিবারবর্গ প্রতিবছর এই মহানামযজ্ঞের আয়োজন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত রোববার রাত ১১টায় মঙ্গলঘট স্থাপন ও সংকল্পযাত্রা করে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে ঘটে জল নিয়ে শুভ অধিবাসের মধ্যদিয়ে এই যজ্ঞ শুরু হয়। স্বর্গীয় দোয়ারকা দাস আগরওয়ালা ও স্বর্গীয় পান্না দেবী এবং স্বর্গীয় তারা দেবীর স্মরণে শুরু হওয়া এই মহানামযজ্ঞ আজ শুক্রবার ভোগ আরতি ও প্রসাদ বিতরণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে।