বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বড়সলুয়া গ্রামে স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয় ধু¤্রজালের। পুলিশ নিয়মিত মামলা নিতে গড়িমশি করায় বিজ্ঞ আদালতের আশ্রয় নেন স্কুলছাত্রীর পিতা। ৪জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। আদালতের নির্দেশে দর্শনা থানা মামলাটি নিয়মিত মামলা হিসাবে রুজু করে এবং দু’জনকে গ্রেফতার করে। এদিকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর তিনমাস পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা। মিমের মৃত্যুর আগে তার অসুস্থতা এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে শুরু হয়েছে নানামুখি গুঞ্জন। ফলে স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের দাবি তুলেছে পরিবারসহ গ্রামবাসী।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বড়সলুয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে ১০ম শ্রেণির ছাত্রী আফরিন মিমের গত ৭ মার্চ রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত শেষে দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়। এ নিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয় দর্শনা থানায়। মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু না অস্বাভাবিক তা নিয়ে নানা প্রশ্ন জাগে মিমের পরিবারের মাঝে। মেয়ের পিতা মিজানুর রহমান দর্শনা থানা আর হাসপাতাল করতে থাকেন। মিজানুর রহমান জানান, ময়না তদন্ত রিপোর্ট কি এসেছে তা জানার হাজারো চেষ্টা করা হলে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই ফজলুর রহমান একবার হাসপাতালে আর একবার থানাতে ঘেরাতে থাকেন। এতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ি। অবশেষে ১ জুন গ্রামের আব্দুল মমিনের ছেলে আবু হুরাইরা ওরফে মশিউর রহমানকে প্রধান আসামি করে মশিউরের পিতা আব্দুল মমিন, মাতা বিলকিছ খাতুন ও মোবারক মোল্লার ছেলে চাচা ইব্রাহীমের নামে দর্শনা থানাধীন বিজ্ঞ আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। এদিকে মামলা দায়েরের পর পুলিশ মঙ্গলবার বড়সলুয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে মামলার ২নং আসামি আব্দুল মমিন ও ৪নং আসামি ইব্রাহীমকে গ্রেফতার করেছে। স্কুলছাত্রী মৃত্যুর বিষয়টি নতুন করে সামনে এলে গতকাল বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা। পরিদর্শনকালে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। গত তিনদিন আগে জানতে পেরেছি। অতীতে কি হয়েছে সেটা বলতে পারবো না। মামলাটি গভীরভাবে তদন্ত করা হবে। স্কুলছাত্রীর সাথে মৃত্যুর আগে যদি কেউ অপরাধ করে থাকে তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে এবং সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করা হবে। কারণ অপরাধ করে কেউ পার পায়নি এখনও পাবে না।
উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মিমকে অপহরণ করেন একই গ্রামের আব্দুল মমিনের ছেলে আবু হুরাইরা ওরফে মশিউর রহমান (২৩)। এতে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেন মশিউরের পিতা আব্দুল মমিন, মাতা বিলকিছ খাতুন ও মোবারক মোল্লার ছেলে চাচা ইব্রাহীম। মশিউর স্কুলছাত্রীকে আটকে বেআইনিভাবে তাকে বিয়ে করেন। গত ৭ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মিম স্কুলে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার চেষ্টা করলে আসামিরা তার কপালে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এতে মিমের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আঘাতের ফলে রক্তক্ষরণের একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।