রতন বিশ্বাস: সবুজ টিনের ছাউনি একটু একটু করে উকি দিচ্ছে, আর গৃহহীন মানুষগুলোর মুখে ফুটে উঠছে হাসির ঝিলিক। দুই চোখে স্বপ্ন ছিল পাকাবাড়িতে বসবাস, আর একটু নিজ নামে জায়গা বা সম্পত্তির। এখন খুঁজে পেয়েছে তার কাক্সিক্ষত স্বপ্নের ঠিকানা, বিনামূল্যে মাথাগোজার এই পাকা ঘর পেয়ে খুশি হতদরিদ্ররা। কায়িক পরিশ্রম শেষে এখন আর ফুটপাত বা অন্যের ঘরের বারান্দায় আশ্রয় খুঁজতে হবে না ভূমিহীন ও গৃহহীন হতদরিদ্র কার্পাসডাঙ্গার হালিমের। ঝড় তাদের তাড়া করবে না, ভিজতে হবে না বৃষ্টিতে। এখন প্রতিদিন ফিরতে পারবেন নিজের পাকা ঘরে। শুধু ঘরই নয়, থাকছে নিজ নামে দুই শতক জমি, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, সুন্দর বারান্দাসহ বসবাসের নিরাপদ সুবিধা। দামুড়হুদার আরামডাঙ্গা গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্ত নাজমা খাতুন, কার্পাসডাঙ্গার রাসিদা খাতুনসহ ২১ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলো পেতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া স্বপ্নের বাড়ি। দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৩য় পর্যায়ের (২য় ধাপ) বরাদ্দকৃত গৃহের উপকারভোগী ভূমিহীন ও গৃহহীন ক শ্রেণীর পুনর্বাসিত্য পরিবারের মধ্যে গৃহ হস্থানন্তার হবে আগামী ২১ জুলাই বৃহস্পতিবার সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মধ্যে এসব বাড়ি হস্তাস্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর বিনামূল্যে ঘর উপহার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। দামুড়হুদা উপজেলায় ৩য় পর্যায়ে কার্পাসডাঙ্গায় ২১টি সহ মোট ৫৩টি ঘর পাচ্ছেন গৃহহীন ও ভূমিহীনরা। নতুন ঘর পাওয়া এসব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষগুলোর চোখে-মুখে এখন অনাবিল স্বপ্ন। ঘর পেয়ে কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করায় ভ্যান চালক হালিমের স্ত্রী বলেন, স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি আমি জমিসহ ইটের একটি নতুন ঘর পাব, শেখ হাসিনার সরকার আমাকে ইটের ঘর দেবেন, ইটের পাকা দালানঘরে থাকতে পারব। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি ঘর পেয়ে। দোয়া করি শেখ মুজিবের মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। স্বামী পরিত্যাক্তা নাজমা খাতুন বলেন, ঘর পাবো কোন দিন কল্পনাও করিনি। ইটের ঘরে মাথা গোজার ঠাই পাবো অনেক খুশি হয়েছি। কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বলেন এরা অনেক কষ্টে জীবনযাপন করে। সরকার আজ তাদের সুন্দর ঘর দেয়ায় তারা অনেক খুশি। জীবনেও কল্পনা করতে পারিনি এভাবে একটি সুন্দর ঘর পাবে তারা। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কল্যাণে আজ তারা ঘর পাচ্ছে। মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘরগুলোর উপকারভোগী বাছাই করতে অনেক শ্রম দিয়েছি। প্রকৃত ভূমিহীন বাছাই করে এই ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ অঞ্চলের মানুষের পক্ষ থেকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন মুজিব শতবর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ভূমিহীন ও গৃহহীন ৫৩ টি পরিবারের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল ৮ টি পরিবার পুনর্বাসিত হয়েছে। ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য চমৎকার পরিবেশে মানসম্মত টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এসব ঘরে তারা আশ্রয় পাবে। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর উপহার পাবেন। এর ফলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা বেগম বলেন, উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্যও সুন্দর মনোরম পরিবেশে মানসম্মত ৫৩টি পাকাবাড়ি নির্মাণ করে ২ শতক জমিসহ ঘর হতদরিদ্রদের হাতে তুলে দেয়া হবে।