যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধোনি (৫২) খুন হয়েছেন। এ খুনের রহস্য উদঘাটনে তৎপর রয়েছে পুলিশ। হামলায় জড়িত রায়হান নামে এক যুবককে শনাক্ত করেছে পুলিশে। তাকে গ্রেফতার করতে পারলেই হত্যাকাণ্ডের রহস্যভেদ হবে বলে ধারণা করছেন আইনশৃংখলা বাহিনী। পুলিশের ধারণা স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে যশোর শহরের নাজির শংকরপুরের আকবরের মোড়ে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন বদিউজ্জামান ধোনি। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
জানা যায়, যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন বদিউজ্জামান ধোনি । ওই মামলায় মাসখানেক আগে তিনি জেল থেকে বের হন। ধোনি হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে রায়হান নামে এক হামলাকারীকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাকে আটক করতে পারলেই হত্যাকাণ্ডের জট খুলবে দাবি পুলিশের। এদিকে, বিকেলে যুবদল নেতা ধোনির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে আনা হয়েছে। স্বজনেরা ঢাকাতে থাকায় এদিন তার দাফন সম্পন্ন হয়নি। রাতে মরদেহ বাড়িতে থাকবে। বুধবার বেলা ১০ টার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগা মাঠে নামাজের জানাযা শেষে কারবালা কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নিহতের শ্যালক তপু রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে সামনের একটি ফার্মেসিতে বসেছিলেন বদিউজ্জামান ধোনি। এ সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী রায়হান, রহিম, আকাশসহ ৪/৫ জন সন্ত্রাসী তার ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। দুর্বৃত্তরা তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে চলে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ধোনিকে। ভর্তির কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। তপুর দাবি, এলাকায় আধিপত্য বিস্তরকে কেন্দ্র করে মনোয়ার নামে এক ব্যক্তি তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। মনোয়ারকে ধরতে পারলেই এই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হবে বলে তিনি মনে করেন।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা বলেন, বদিজ্জামান ধোনি একজন সাদা মনের মানুষ। এলাকার লোকজন তার কাছে বিভিন্ন বিষয়ে শলা পরামর্শ নিতো এবং তার মধ্যস্থতায় বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতেন। তিনি এভাবে খুন হবেন এটা আমরা ভাবতেই পারছি না। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আটক করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান তিনি।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে রায়হান নামে এক হামলাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে আটক করতে পারলেই হত্যাকাণ্ডের জট খুলবে। তিনি আরও বলেন, মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রাত ৯ টা পর্যন্ত এই ঘটনায় মামলা হয়নি। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে, ঘটনাস্থল আর নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলেছেন র্যাব-৬ সদস্যরা। এ বিষয়ে র্যাব-৬ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার নাজিউর রহমান জানান, তিনি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। র্যাবের পক্ষ থেকে ছায়া তদন্ত চলছে।