মুজিবনগর প্রতিনিধি: রাজধানীর তেজগাঁও হাটে গরু বিক্রি করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন মেহেরপুরের মুজিবনগরের সেই রাজা বাবুর মালিক। একটি কোম্পানীর নামে রাজাবাবুকে কেনা হয়েছে মর্মে প্রচার হলেও তারা গরু কিনতে আসেননি। ফলে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর ধরে পালিত রাজাবাবুকে পানির দরে বিক্রি করে নিরাস হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ইনসান আলী।
স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে রাজাবাবুকে নিয়ে রাজধানীর তেজগাঁও হাটে গিয়েছিলেন ইনসান আলী। সেখানে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম ওঠে মুজিবনগরের রাজাবাবুর। এক পর্যায়ে সাড়ে ২৭ লাখ টাকায় বেচার জন্য এক জনের সাথে চুড়ান্ত দরদাম চলছিলো। এর মাঝে একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীর ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি রাজাবাবুকে কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। গরু মালিক ইনসান আলীর সাথে শেষ পর্যন্ত সাড়ে ২৯ লাখ টাকায় দাম চুড়ান্ত করেন ওই ম্যানেজার। ইনসান আলীসহ রাজাবাবুর ছবি ধারণ করে তা একটি ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়। এতে রাজাবাবুর অন্য ক্রেতারা ধরে নিয়েছিলেন বিক্রি হয়ে গেছে রাজাবাবু। তবে দুইদিন অপেক্ষার পর অজ্ঞাত ওই ম্যানেজার রাজাবাবুকে আর নিতে আসেননি। অন্য ক্রেতারাও ছিলেন বিমুখ।
এদিকে কোরবানির ঈদ মাত্র একদিন বাকি। কোম্পানীর ম্যানেজারের দেখা না পেয়ে হতাশ হন ইনসান আলী। প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন বুঝতে পেরে রাজাবাবুকে নিয়ে আসেন গাবতলী কোরবানী পশুহাটে। সেখানে ঈদের আগেরদিন মাত্র ৭ লাখ টাকায় বিক্রি করে একবুক হতাশা নিয়ে বাড়ি ফেরেন আলোচিত রাজাবাবুর মালিক ইনসান আলী। অপরদিকে রাজাবাবুকে কেনা হয়েছে মর্মে পোস্ট দেয়া সেই পেজের আর কোন হদিস পাননি ইনসান আলী।
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের উদ্যোগী কৃষক ইনছান আলী। স্থানীয় এক ব্যাপারীর কাছ থেকে সাড়ে তিন বছর আগে একটি বাছুর কেনেন ৮৫ হাজার টাকায়। ফিজিয়ান জাতের বাছুরটি উত্তম পরিচর্যা আর প্রাণি সম্পদ অফিসের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবায় আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে রাজাবাবু। যার ওজন দাড়ায় ৬০ মণের ওপরে।
দেশের ক্রমবর্ধমান মাংসের চাহিদা মেটাতে গরু মোটাতাজাকরণ জনপ্রিয় খাত হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। ফলে রাজাবাবুর মতো অনেক ষাড় দেখা যায় কোরবানির বাজারে। বিপুল অর্থ ব্যয় করে তৈরী করা এসব ষাড়ের মালিকরা যেন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ নাহয় সেদিকে নজর রাখতে সংশ্লিষ্ঠদের আরও আন্তরিক হওয়ার দাবি জানিয়েছেন খামারিরা।