রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে: বাইডেন
মাথাভাঙ্গা মনিটর: ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে ‘বিনা উসকানিতে অযৌক্তিক হামলা’ আখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর উত্তরে মিত্র শক্তি রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এ নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে আজ জি-৭ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বাইডেন। এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন একটি পরিকল্পিত যুদ্ধ শুরু করেছেন, যা মানুষের জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় আর দুর্দশা ডেকে আনবে। এই হামলা যে ধ্বংসযজ্ঞ বয়ে আনবে, যে প্রাণক্ষয়ের কারণ হবে, তার দায় পুরোপুরি রাশিয়াকেই বহন করতে হবে। সেজন্য বিশ্বের কাছে রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে। বাইডেন বলেন, আমি জি-৭ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবো এবং আমেরিকা ও আমাদের মিত্ররা সম্মিলিতভাবে রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। ইউক্রেন এবং ইউক্রেনের জনগণকে সমর্থন ও সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবো আমরা। হোয়াইট হাউজ বলছে, স্থানীয় সময় বুধবার রাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির জেলনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন বাইডেন। ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালানোর পরই বাইডেন ফোনে কথা বলেন জেলনস্কির সঙ্গে। বাইডেন বলেন, আমরা ইউক্রেন ও ইউক্রেনের জনগণের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা চালিয়ে যাব। কোনোরকম উস্কানি ছাড়া রুশ সেনাবাহিনী অবিবেচক হামলা চালাচ্ছে।
কেউ নাক গলালে তাৎক্ষণিক জবাব: পুতিন
মাথাভাঙ্গা মনিটর: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, আত্মরক্ষার অংশ হিসাবেই ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। এতে কেউ নাক গলালে তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়া হবে। রাশিয়ার স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ওই ভাষণে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিয়ে পুতিন বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় অবিলম্বে আমাদের এমন পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন পড়েছে। পূর্ব ইউক্রেনের দনবাসের স্বাধীন দুটি প্রজাতন্ত্র (দোনেস্ক ও লুহানস্ক) আমাদের কাছে সাহায্য চেয়ে অনুরোধ করেছে। জাতিসংঘ সনদের সপ্তম অধ্যায়ের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আমি সেখানে একটি বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পুতিন ভাষণে ইউক্রেনের সেনাদের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সম্ভাব্য রক্তপাতের সব দায় বর্তাবে ইউক্রেন সরকারের ওপর। পুতিন আরও বলেন, ইউক্রেন দখলের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। কারও ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা আমাদের নেই। ভাষণের ঠিক আগে রাশিয়ার মিত্র দেশ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোকে ফোন করেছিলেন পুতিন। লুকাশেঙ্কোর কার্যালয় জানায়, পুতিন ফোনে লুকাশেঙ্কোকে জানান, মস্কো ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে। ফোনালাপে লুকাশেঙ্কোকে ইউক্রেন সীমান্ত ও পুর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী-নিয়ন্ত্রিত দনবাস অঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন পুতিন। বেলারুশ দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসাবে পরিচিত। বেলারুশে রাশিয়ার কয়েক হাজার সেনা রয়েছে। বেলারুশের সঙ্গে সম্প্রতি সামরিক মহড়া করে রাশিয়া।
মানবতার দোহাই যুদ্ধ বন্ধ করুন: গুতেরেস
মাথাভাঙ্গা মনিটর: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের প্রতি ‘মানবতার খাতিরে’ যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ইউক্রেন নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি এক বৈঠকের পর তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন, মানবতার দোহাই, আপনার সেনাদের রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিন। এ নিয়ে একটি টুইটও করেন গুতেরেস। জাতিসংঘ মহাসচিব সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধ ইউক্রেনের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি নিয়ে আসবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এর পরিণতি? সুদূরপ্রসারী হবে। এর আগে ইউক্রেন সংকট নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেন গুতেরেস। সেখানে তিনি বলেন, অনেক বছর ধরে যে সংঘাতের মুখোমুখি হইনি, এমনই এক সংঘাত এড়াতে এখনই সংযম, ন্যায়সঙ্গত আচরণ এবং উত্তেজনা কমানো প্রয়োজন। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ইউক্রেনে সংঘাত বাড়লে বিশ্বে এমন সংকট দেখা দেবে, যা বহু বছর দেখা যায়নি। তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটার এবং সংলাপ ও সমঝোতার পথে ফিরে আসার। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে টেলিভিশন ভাষণে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন। একে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ আখ্যা দিয়ে পুতিন বলেন, এর ফলে ইউক্রেনের জনগণ ‘মুক্তভাবে নির্বাচন করতে’ সক্ষম হবে, কারা দেশ পরিচালনা করবে? পূর্ব ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার লাখো সেনা মোতায়েন নিয়ে উত্তেজনা চলছিল বেশকিছু দিন ধরে। সোমবার পূর্ব ইউক্রেনকে স্বাধীন ঘোষণার পর রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান ছাড়াও ইউরোপের ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম টুতেও কঠোর নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছে ইউরোপ। আপাতত প্রকল্প স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসছেন রাশিয়ার ৩৫১ আইনপ্রণেতা। ইইউর ব্যাংকগুলোতে থাকা রাশিয়ার তহবিল আটকে দেয়ার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।