স্টাফ রিপোর্টার: ‘ধুমপান যেভাবেই হোক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাকের ধোয়ায় ৭ হাজারের বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক রয়েছে, যা শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। জর্দ্দা, গুলসহ যেভাবেই তামাক ব্যবহার করা হয় তাতে শরীরে ভয়াবহ রোগ ডেকে আনে। তামাক জনিত অসুস্থতার চিকিৎসা করতে গিয়ে বহু পরিবার যেমন পথে বসেছে, তেমনই অসুস্থ ব্যক্তিকেও অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়তে হয়।’
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষ চিত্রায় অনুষ্ঠিত উপজেলা পর্যায়ে তামাক বিরোধী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপরোক্ত তথ্য তুলে ধরে দেশে তামাক কতটা ক্ষতি করছে তা বর্ণনা করা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে ধুমপান, তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যহারের ফলে মানবদেহে ক্ষতিকর দিক ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত দিক তুলে ধরেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. আউলিয়ার রহমান। বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবায়ের মাসরুর, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র শাহা। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শংকরচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি শাহ আলম সনি, পল্লী উন্নয়ন সংস্থার (পাস) নির্বাহী পরিচালক ইলিয়াস হোসেন, প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়কারী সাইদুর রহমান। এ সময় বক্তারা বলেন, ধুমপানের কারণে মানুষের ফুসফুসে ক্যন্সার হয়, স্ট্রোকসহ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। ধোয়াবিহীন তামাজাতদ্রব্য যেমন গুল, জর্দ্দা, সাদা তামাক সেবনে মানুষের মুখে ও গলায় ক্যান্সার হয়। এমনকি মেয়েদের গর্ভের সন্তানের ক্ষতিসহ প্রতিবন্ধী সন্তান প্রসব করে। বক্তারা আরও বলেন কিছু লাভের আশায় কৃষকেরা জমিতে তামাক চাষ করে থাকে। তারা কখনও ভেবে দেখে না এর ফলে জমির উর্বর ক্ষমতা হ্রাস পায়, শুধু তাই নয় তামাক চাষের সাথে জড়িত কৃষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা শ^াসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হয়। তামাকজনিত কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। এদিক বিবেচনা করে দেশের মানুষকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন শীর্ষক সাউথ এশিয়ান স্পিকারস সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দেন এবং তামাকের ওপর বর্তমান শুল্ক কাঠামো সহজ করে একটি শক্তিশালী তামাক শুল্ক নীতি গ্রহণের নির্দেশনা দেন। এ ঘোষণাকে বাস্তবায়ন করার জন্য এলাকার দোকানে বা বিভিন্ন স্থানে বিজ্ঞাপন প্রচারকারী ও পাবলিক প্লেসে ধুমপানকারীকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা হবে। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।