পরিবারের সদস্যরা ছাড়া দিনটি মনে রাখেনি কেউ

দামুড়হুদার জয়রামপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার ৬ বছর

দর্শনা অফিস: দামুড়হুদার জয়রামপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার ৬ বছর পার হয়েছে গতকাল ২৬ মার্চে। প্রথম বর্ষপূর্তি গ্রামবাসী, রাজনৈতিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পালন করা হলেও ২য় বছর থেকে পরিবারের সদস্যরা ছাড়া তা কেউ আর মনে রাখেনি। যে কারণে হয়নি স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল। ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ স্মরণকালের ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় দামুড়হুদা বড়বলদিয়া গ্রামের ১৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। ঘটনাটি শুধু জেলাতেই নয় গোটা দেশেই ছিলো আলোচনায়। গত ৬ বছর আগে ভয়াবহ এ দিনের বর্ষপূর্তিতে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হলেও তার পরের বছর থেকে যেনো সকলের মন থেকে মুছেই গেছে সে ঘটনা। যে কারণে আর কোনো রাজনৈতিক দল, সামাজিক গোষ্ঠী বা কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিলের আয়োজনটুকুও করা হয় না। শুধুমাত্র নিহতের পরিবারের মধ্যে কোনো কোনো সদস্য দিনটি স্মরণ করে ছোট পরিসরে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। ৬ বছর আগে ২৬ মার্চ ভোরে চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা মহাসড়কের জয়রামপুর স্কুল বটতলায় ঘটেছিলো এ অঞ্চলের স্মরণকালের ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা। বালুভর্তি ট্রাকের মুখোমুখি ধাক্কায় আলমসাধু চালকসহ ১৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। আহত হন ১০ জন। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বড়বলদিয়া পশ্চিমপাড়ার ইন্নাল ম-লের ছেলে দুই সন্তানের জনক আকব্বর (৫০), ঠান্ডু ম-লের ছেলে দুই সন্তানের জনক বিল্ল¬াল হোসেন (৩৫), ফকির চাঁদের ছেলে দুই সন্তানের জনক লাল মিয়া (৪০), নাসির উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২২), কালু (১৯), আহসান বিশ্বাসের ছেলে শরিফুল (৪০), নিয়ামত আলীর ছেলে জিয়াউর রহমান (৩৮), আ. জলিলের ছেলে আতিকুল (৩৫), মাঝপাড়ার কিতাব আলীর ছেলে তিন সন্তানের জনক নজির আহম্মেদ (৪৫), খোদাবক্সের ছেলে দুই সন্তানের জনক জজ মিয়া (৩২), ভোলাই ম-লের ছেলে এক সন্তানের জনক বিল্ল¬াল হোসেন (৪৫), বাবুল হোসেনের ছেলে দুই সন্তানের জনক হাফিজুল (৩৫), ফরজ আলীর ছেলে তরিকুল (২৮), কিতাব আলীর ছেলে সোহরাব (৫০), মিনাজ উদ্দিনের ছেলে আলী হোসেন (৫২), আজান আলীর ছেলে আলতাফ (৪০), আমদ আলীর ছেলে নুরুল (৫৫), লুতফরের ছেলে গাজি মিয়া (৪০), খালপাড়ার গাজি মিয়ার ছেলে আলমসাধু চালক শান্ত (২৫), লিয়াকত আলীর ছেলে শাহীন (২০), রমজান আলীর ছেলে তিন সন্তানের জনক রফিকুল (৫৫), গোলাম রহমানের ছেলে দুই সন্তানের জনক ইজ্জত আলী (৫৫) ও সুলতানপুরের ফিরোজ আলীর ছেলে এক সন্তানের জনক শফিকুল (২৭) রাস্তা নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দীর্ঘদিন ধরেই এ পেশায় নিয়োজিত ছিলেন তারা। নিজেদের ব্যবস্থায় যাতায়াতের জন্য সম্মলিতভাবে কেনা আলমসাধুযোগে ওই দিন ভোরে যাচ্ছিলেন আলমডাঙ্গার উদ্দেশ্যে। নিহত ১৩ শ্রমিকের স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়েছে বড়বলদিয়ায়। তবে সে স্মৃতি ফলকের অস্তিত্ব আছে কী-না তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন রয়েছে, তেমনি ওই স্মৃতি কেউ গিয়ে ১৩ শ্রমিককে স্মরণ করতেও কাউকে দেখা যায় না।

 

Comments (0)
Add Comment