আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জীবননগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ৩টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে উৎসবমুখর পরিবেশে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের তালে তালে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধান অতিথি মাহমুদ হাসান খান বাবু ও উদ্বোধক শরীফুজ্জামান শরীফ। অনুষ্ঠান থেকে শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএপির সদস্য সচিব শরীফজ্জামান শরীফ। দীর্ঘ ১১ বছর পর গতকাল শুক্রবার এ ইউনিয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণ চঞ্চল্যতা দেখা য়ায়। গত ২০১১ সালে জীবননগর উপজেলার এ ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন খান খোকনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির উপ কোষাধ্যক্ষ চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিএনপি এদেশের গণ মানুষের দল, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আপনারা গণতান্ত্রিকভাবে আপনাদের ভোটের মাধ্যমে আপনাদের নেতা নির্বাচিত করবেন। আপনার সেøাগান থাকবে আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। ইউনিয়নে ইউনিয়নে শক্তিশালী কমিটি গঠনে আপনার পছন্দের নেতাকে ভোট দিয়ে কমিটি নির্বাচিত করুন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ কারো প্রতিপক্ষ থাকবে না। তিনি আরো বলেন, আমরা শহীদ জিয়ার আর্দশে বিশ্বাসী। নির্বাচনে জয় পরাজয় থাকবে। প্রতিহিংসার নীতি পরিহার করে নির্বাচনের পর আপনারা সকলে হাতে হাত, কাঁেধ কাঁধ মিলিয়ে সম্মিলিতভাবে আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। যদি কোনো ইউনিয়নে ভোট নয়, সন্বয়ের মাধ্যমে কমিটি উপহার দেন আমরা সে কমিটিকে সাধুবাদ, স্বাগত ও ধন্যবাদ জানাবো। সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি ও তার সুচিকিৎসার দাবি জানান। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল জব্বার সোনা, খাঁজা আবুল হাসানাত, আবুল হোসেন তোয়া, সাবেক যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমদাদুল হক ডাবু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রোকন, উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সীমান্ত ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন মইন, বেগমপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহম্মদ, জীবননগর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান হাজি নোয়াব আলী, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান মোমিন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান ঝন্টুসহ জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির নেতাকর্মী এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলন শেষে আন্দুলবাড়িয়া, উথলী, সীমান্ত, হাসাদহ, রায়পুর, মনোহরপুর ও কেডিকে ইউনিয়নের মধ্যে উথলী ও সীমান্ত ইউনিয়নের কমিটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সন্বয়ের মাধ্যমে গঠন করা হয়। আন্দুলবাড়িয়া, রায়পুর, মনোহরপুর, হাসাদহ ও কেডিকে ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রাথীদের মধ্যে গোপন ব্যালেটের মাধ্যমে ইউনিয়ন কমিটি সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একমাত্র বাঁকা ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন অনিবার্য কারণ বশতঃ স্থগিত রাখা হয়েছে। নিবার্চন শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। প্রাপ্ত ফলাফল ঘোষণায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আতিয়ার রহমান, ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন সাধারণ সম্পাদক পদে আজিম খান ও সহসভাপতি পদে রফু উদ্দিন। হাসাদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শাহাজান আলী, সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুস সালাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, সীমান্ত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ওসমান গণি, সহসভাপতি বিপলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বদর উদ্দিন বাদল, সহ-সাধারন সম্পাদক নবাব ইমরান হোসেন টিটু ও সাংগঠনিক সম্পাদক আয়ূব আলী। উথলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সেলিম রেজা, সহ-সভাপতি ইউনুছ আলী, সাধারণ সম্পাদক মিজবাহ উদ্দিন জাহিদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক নাসির হায়দার হিরক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুজিবর রহমান। রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান। এ ইউনিয়নে সাধারণ সম্পাদক পদে মতিয়ার রহমান ও আনিছুর রহমান স্বপন উভয় ৩৪ ভোট পাওয়ায় পদটি স্থাগিত ঘোষণা করা হয়। কেডিকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মনোয়ার হোসেন মাস্টার, সহ-সভাপতি বজলুর রহমান টুটু, সাধারণ সম্পাদক রাফিউল আলীম, সহ-সাধারণ রফিকুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা যুবদলের অন্যতম নেতা সাইফুল ইসলাম ও আবু তালেব।