স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে একপক্ষের কিশোরীসহ চার জনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় পক্ষের ৩-৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আলমডাঙ্গা থানার ওসি। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৭টার দিকে খাসকররা গ্রামের উত্তরপাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে।
প্রথমপক্ষের আহতরা হলেন, খাসকররা গ্রামের উত্তরপাড়া সদর উদ্দিনের ছেলে ওয়াদুদ (৫০), তার স্ত্রী দারকিনা বেগম (৪৫), মেয়ে বর্ষা খাতুন (১৬) ও প্রতিবেশী মৃত মঙ্গল ম-লের ছেলে ওহিদুল ইসলাম (৫৫)। তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে ওয়াদুদ, তার স্ত্রী ও মেয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
অপরদিকে, দ্বিতীয়পক্ষের একই এলাকার কাছেদ আলীর ছেলে সোহেলসহ ৩-৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সোহেল আহতের খবর পাওয়া গেলেও বাকি আহতদের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন দ্বিতীয়পক্ষের শুধু সোহেল আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খাসকররা গ্রামের সদর উদ্দিনের চার ছেলে কাছেদ আলী, সন্নত আলী, ওয়াদুদ আলী এবং মোতালেব হোসেন। এরমধ্যে দুই ছেলে মোতালেব এবং সন্নত প্রবাসী। পিতার জমিজমা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত চার ভাইদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে গতকাল রাতে মোতালেবের ছেলে রাকিব হোসেন এবং কাছেদের ছেলে সোহেল তার চাচা ওয়াদুদকে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ওয়াদুদের স্ত্রী দারকিনা, মেয়ে বর্ষা খাতুন, প্রতিবেশী ওহিদুল ইসলাম ঠেকাতে গেলে তাদেরকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
অপর একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি কাছেদের ছেলে সোহেল গোপনে বিয়ে করেন। গতকাল চাচাতো বোন বর্ষা খাতুন গোপনে বিয়ের বিষয়টি জানতে চাই সোহেলের নিকট। এতে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি দুই পরিবার পর্যন্ত গড়ায়। এ নিয়ে পূর্বের বিরোধের জেরসহ গতকাল সন্ধ্যার পর সোহেল ও তার চাচাতো ভাই রাকিব মিলে ওয়াদুদ, তার স্ত্রী, মেয়ে ও এক প্রতিবেশীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, ধারালো অস্ত্রের কোপে ওয়াদুদের একটি কান দ্বিখ-িত হয়েছে। কানের নিচে, হাত ও মাথায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তার স্ত্রী দারকিনা খাতুনের হাতের চারটা শিরা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। মেয়ে বর্ষা খাতুনের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এছাড়া ওহিদুলের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপে জখম রয়েছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম নিশ্চিত করে দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, জমিজমা ভাগাভাগি নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে একপক্ষের চারজন ও অপর পক্ষের ৩/৪ জন আহত হয়েছে বলে জেনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।