ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: টাকার লোভে কালীগঞ্জের একটি ক্লিনিকে এক নারীর ভুল অস্ত্রোপচারের ফলে তার জীবন সঙ্কটে পড়েছে। পেটের মধ্যে নাড়ি পেঁচানো রয়েছে বলে অস্ত্রোপচার শুরুর আগে ডাক্তাররা জানান, তার অন্য সমস্যা। পরে তড়িঘড়ি করে পেট সেলাই করে এখনও তাকে ক্লিনিকে রেখেছেন তারা।
জানা গেছে, প্রচ- পেটের ব্যথা নিয়ে কালীগঞ্জ শহরের হাসনা ক্লিনিকে ভর্তি হন গৃহবধূ রহিমা বেগম (৩৮)। এরপর প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ডাক্তাররা জানান, রোগীর পেটের মধ্যে নাড়ি পেঁচানো রয়েছে। তাকে দ্রুত অপারেশন করা প্রয়োজন। এরপর আর্থিক চুক্তি সম্পন্ন করেই বৃহস্পতিবার রাতে ক্লিনিকের ডা. আসলাম হোসেন ও ডা. প্রবীর কুমার বিশ্বাস অস্ত্রোপচার শুরু করেন।
রোগীর পরিবার জানায়, অস্ত্রোপচার সম্পন্ন না করেই ডাক্তাররা তার কাটা পেট সেলাই করে ফের বেডে স্থানান্তর করেন। সেই থেকেই ক্লিনিকের বেডে শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন রহিমা।
ওই নারীর স্বামী কালীগঞ্জ উপজেলার আনন্দবাগ গ্রামের জহুরুল ইসলাম জানান, তার অসুস্থ স্ত্রীকে গত ৬ আগস্ট হাসনা ক্লিনিকে ভর্তি করেন। নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০ হাজার টাকায় চুক্তিতে অস্ত্রোপচার করার কথা ছিলো। রোগী এখনও ওই ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি এই অপচিকিৎসার জন্য ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকের বিচার চান।
অভিযুক্ত ডা. প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, রোগীর পেট কাটার পর নাড়িতে টিউমার দেখতে পান। কন্ডিশনও বেশ জটিল থাকায় তারা অপারেশন সম্পন্ন না করেই সেলাই দিয়ে বেডে পাঠান। ডাক্তার বলেন, এমন রোগীকে যে কোনো মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন করাতে হবে।
অর্থের লোভে অপারেশন করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ক্লিনিকের মালিক আব্দুর রহমান কোনো জবাব দিতে চাননি। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাজহারুল ইসলাম জানান, কেউ অপচিকিৎসার শিকার হলে লিখিত অভিযোগ দিতে পারেন। অভিযোগ পেলে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।