ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠক মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ ও শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহে তদন্ত করতে আসেন। করোনাকালীন সময়ে অফিস ফাঁকি, শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার ও এমপিওভুক্তির নামে বেপরোয়া অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে। অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠক বেশ কয়েকজন শিক্ষকের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। অভিযোগ উঠেছে করোনাকালীন সময়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশ আমান্য করে শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেব কর্মস্থলে থাকতেন না। এছাড়া তিনি ও তার গাড়ির ড্রাইভার অফিস ভবনের তিন তলা ভাড়া ও কারেন্ট বিল না দিয়ে বসবাস করেন। শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের এমপিওভুক্তির আবেদন অনলাইনে পাঠানোর জন্য প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম খলিলের কাছে ঘুষ দাবি ও তার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল হাই ডিও লেটার দিলেও এমপিও ভুক্তির আবেদন বাতিল বা অগ্রগামী না করে ফেলে রাখেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম খলিল রহমান শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর অভিযোগ করেন। ইতোপূর্বে শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। সে বিষয়টিও মাউশির মহাপরিচালক অধিদপ্তরে দুর্নীতিবাজরা ধামাচাপা দিয়েছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ মে সপ্তাহিক ডাকুয়া পত্রিকার সম্পাদক শামিম বিন সাত্তার ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে কর্মস্থল ত্যাগসহ দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার দিনই মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে তদন্তের নির্দেশ দেন একই সাথে গৃহীত ব্যবস্থা মন্ত্রী পরিষদ বিভাগকে অবহিত করতে বলেন। শিক্ষা মন্ত্রনালয় গত ৩০ জুলাই শিক্ষা অধিদপ্তরকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলে। সেই আলোকে গত ৬ আগষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠককে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে রোববার বিকালে উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠক বলেন, আমি সরেজমিন তদন্ত করেছি। সব অভিযোগের সত্যতা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার সুশান্ত কুমার দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী শামিম বিন সাত্তার তদন্ত কমিটির সামনে আসেনি। আবার শিক্ষকরাও ঘুষের অভিযোগ করেননি। তাছাড়া শিক্ষা অফিসার অফিসের তিন তলায় বসবাস করলেও তিনি ভাড়া দিয়ে থাকেন। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা অফিসার অফিস ফাঁকি দিয়ে গাইবান্ধায় থাকতেন বলে তিনি স্বীকার করেন। অভিযোগকারী শামিম বিন সাত্তার বলেন, মাউশি’র খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর ড.হারুন অর রশিদের করা তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। সেখানে সুশান্ত দেবের দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। তিনি বলেন, তদন্ত দলের সামনে উপস্থিত থাকা আমার জরুরী নয়। আমার অভিযোগ সত্য কিনা সেইটা প্রমাণ করবেন তদন্ত কর্মকর্তা।