ঝিনাইদদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় চোরের ফেলে যাওয়া ছয়টি গরুর মালিকানা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। শুধু তাই নয়, প্রকৃত মালিক নির্ধারণ করতে এবার গরুর ডিএনএ টেস্টও করা হতে পারে। পুলিশের জব্দ করা ছয়টি গরুর মালিকানা দাবি করছেন বেশ কয়েকজন। এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে আদালতে যেতে বাধ্য হয় পুলিশ। তারা একটি জব্দ তালিকা করে ঝিনাইদহ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালতে যান মালিকানা দাবি করা কয়েকজনও। এই পাল্টাপাল্টি অবস্থানে গরুর ডিএনএ টেস্ট করানোর মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মালিকানা যারা দাবি করছেন, তাদের কাছে থাকা গরুর সঙ্গে জব্দ করা গরুর ডিএনএ টেস্ট করা হবে। এক্ষেত্রে মালিকানা দাবিদারদের কাছে ওইসব গরুর মা এমনকি বাচ্চা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট কালীগঞ্জ উপজেলার দুলালমুন্দিয়া থেকে ছয়টি গরু জব্দ করে পুলিশ, যার বাজার মূল্য চার লাখ টাকা হতে পারে। এরপর উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়ার আহ্বান করে পুলিশ। কিন্তু একাধিক লোক এসব গরুর মালিকানা দাবি করায় পুলিশ বিষয়টির সমাধান করতে পারেনি। তাদের দাবি, উপযুক্ত প্রমাণাদি দেখাতে পারেনি দাবিদাররা। এতে প্রকৃত মালিক যারা, তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
কালীগঞ্জ থানার এসআই সুজাত হোসেন জানান, স্থানীয় চারজন ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি মৌখিকভাবে গরুগুলোর মালিকানা দাবি করছিলো। যে কারণে পুলিশ বাধ্য হয়ে আদালতে যায়। পাশাপাশি মালিকানা দাবিদারদের পক্ষ থেকেও আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হয়। সেই প্রতিবেদনটি তদন্তের জন্য আবার থানায় আসে। অবশ্য পরদিনই তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।
সেই প্রতিবেদনে পুলিশ জানায়, গরুর মালিকানা দাবিদাররা উপযুক্ত প্রমাণাদি দেখাতে পারেনি। তাই উপযুক্ত প্রমাণ দিয়েই প্রকৃত মালিকরা আদালত থেকে গরুগুলো নেবেন।
কালীগঞ্জ পৌর এলাকার মধুগঞ্জ বাজারের এনামুল হক ঈমানের তিনটি, মুন্নার একটি, ঢাকালে পাড়ার পারভেজ রহমান রচির একটি ও পৌরসভার পানির লাইনের কর্মচারী নুর ইসলাম একটি গরু বলে দাবি করা হচ্ছে।
এনামুল হক ঈমান জানান, পুলিশের জব্দ করা গরুগুলোর মালিক তারা চারজনই। তারা বারবার থানাতে গেলেও গরু ফেরত দেয়নি পুলিশ। উল্টো দুদিন পর থানা থেকে তাদের জানিয়ে দেয়া হয় আদালত থেকেই গরু নিতে হবে। তাই বাধ্য হয়েই তারাও আদালতে যান। পরবর্তীতে আদালতে পাঠানো পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের পাল্টা নারাজি পিটিশনও দেন তারা।
এনামুল হক ঈমান বলেন, গরুর মালিকানা নির্ধারণে কী কী প্রমাণ দিতে হবে, তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। অথচ ভাগ্যক্রমে চোরদের কবল থেকে গরুগুলো রক্ষা পেয়েছে। এবার আইনি জটিলতার কারণে আটকে আছি। তারা পুলিশের ভোগান্তিতে নাজেহাল হয়ে পড়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, অনেকেই গরুর মালিকানা দাবি করাতে তারা জব্দ তালিকা করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে দাবিদাররাও আদালতে যান। সার্বিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টি জটিল হয়ে পড়েছে। তাই সঠিক মালিকানা নির্ধারণে প্রয়োজনে গরুর ডিএনএ টেস্টও করানো হতে পারে।