নজরুল ইসলাম: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণের পর মাত্র ৬ হাজার ৪৭৫ টাকা নিয়ে নতুন পরিবারের যাত্রা শুরু হয়েছে। পরিষদ নতুন, জনপ্রতিনিধিরাও নতুন। একেবারেই নতুন সংসার পাততে হবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। তাই প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তির সম্ভবনাও থাকবে কম। পরিষদের নিজেস্ব ভবন না থাকায় প্রয়াত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান ছাব্দারের টিনের চালা ঘরের দু’টি কক্ষে আপাতত চলবে পরিষদের কার্যক্রম। তাই নাগরিক সুবিধা পেতে একটু অসুবিধা হলেও তা মেনে নিতে হবে সকলকে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ বিভক্ত হয়ে গঠিত হয়েছে নবগঠিত ৮নং গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ। ২০ অক্টোবর ইভিএম’র মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে নির্বাচন। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বহু পথ পাড়ি দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান ছাব্দারের উত্তরসুরি শফিকুর রহমান রাজু মাস্টার। নির্বাচনের ২৭ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। দায়িত্বভার গ্রহণকালে মাত্র ৬ হাজার ৪৭৫ টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করছেন তিনি। যার পিতা মরহুম সাইদুর রহমান ছাব্দার ১৯৭৩-৭৭ সাল, ১৯৮৩-৮৮ সাল, পুনরায় ১৯৯২-৯৭ সাল এবং মাতা সাহিদা ছাব্দার ১৯৯৭-২০০৩ পর্যন্ত তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পিতা-মাতা ছিলেন চেয়ারম্যান; ছেলেও আজ চেয়ারম্যান। এক কথায় শফিকুর রহমান রাজু হচ্ছে চেয়ারম্যান পরিবারের সন্তান। স্থানীয়রা জানান, সাইদুর রহমান শুধু চেয়ারম্যানই ছিলেন না, এলাকার অভিভাবক ছিলেন। আদর্শে মুক্তিযোদ্ধার চেতনা বহন করতো বলে কোনোদিনই অন্যায়ের সাথে আপস করেননি। তাইতো জনসেবা করতে গিয়ে সাইদুর রহমান ছাব্দার পৈত্রিক ১শ বিঘা জমিও নষ্ট করেছেন। তারই ছেলে আজ চেয়ারম্যান। তাই তার কাছে জনগণের প্রত্যাশাটাও অনেক। পিতার মতো জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে জনগণের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারেন এটাই এখন দেখার বিষয়। নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজু ৪ ভাইয়ের মধ্যে মেজ। রয়েছে ৩টি বোন। যারা অন্যের সংসার করছেন। তিনি পেশায় শিক্ষক ও পাশাপাশি ছোটখাট ঠিকাদারির কাজ করেন। বড় ভাই পুলিশের ইন্সপেক্টর, সেজোভাই বাড়িতে কৃষিকাজ করেন আর ছোট ভাই বাইং হাউজে চাকরি করেন। সহধর্মীনি নুরজাহান রহমান মুনিয়া একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। মিষ্ঠভাষী শফিকুর রহমান রাজু বলেন, পিতা যখন এত সম্পদ বিক্রি করে মানুষের সেবা করে গেছে সেখানে আমার চাওয়া পাওয়ার কি-ই বা থাকতে পারে। পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে জীবনের বাকিটুকু সময় পার করতে চাই। মানুষের সেবা করাই আমাদের পরিবারের কাজ। সকলের সহযোগিতা পেলে নবগঠিত ইউনিয়নটিকে স্বপ্নের মত করে গড়ে তুলতে চাই। আজকের এই দিনে সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে বাবাকে। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো সন্তানের সফলতায় বেশিই খুশি হতেন।