কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় ভিজিডি’র চাল ও বয়স্কদের ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সংক্রান্ত সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দৃষ্টিগোচর হওয়ায় সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ওই ইউপি চেয়ারম্যান, সহযোগী ইউনিয়ন সমাজ কর্মী ও মহিলা ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে স্ব-প্রনোদিত আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সেলিনা খাতুনের আদালত কর্তৃক ইস্যুকৃত ক্রিমিন্যাল মিসকেস নং ০২/২০২০ ফৌ:কা:বি: ১৯০(১) (সি) ধারায় আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে নিশ্চিত করেন। আদালতসুত্রে মামলার বিবরণে জানা যায়, “গত ২১ এপ্রিল গণমাধ্যমে “এবার মিরপুর কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক ভিজিডির চাল ও বয়স্ক
ভাতার টাকা আত্মসাৎ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদনটি কুষ্টিয়া আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়। ফিল্ড সুপারভাইজার এর সহযোগিতায় সরকারী নীতিমালা না মেনে এলাকার অনেকের কম বয়স দেখিয়ে বয়স্ক ভাতার টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, কুর্শা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রাজিয়া খাতুন তার স্বামীর নামে অবৈধভাবে প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। এছাড়াও চেয়াম্যান ওমর আলী ভিজিডির চাল নিয়ম অনুযায়ী প্রদান না করে আত্মসাৎ করে আসছেন মর্মে অভিযোগ আছে। ইহা একটি ফৌজদারী অপরাধ। বিষয়টি ততন্তপূর্বক আগামী ০৮ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হলো।” এ ব্যপারে অভিযুক্ত মিরপুর উপজেলার ১০নং কুর্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওমর আলীর মুঠোফোনে একাধিকার কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মমকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে ইস্যুকৃত বিজ্ঞ আদালতের আদেশটি এখনও হাতে পায়নি। হাতে পেলে বিজ্ঞ আদালত নিদের্শিত প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, নিরোমী নামের এক অসহায় দুস্থ্যের নামে ইস্যুকৃত ভিজিডি কার্ড থাকা সত্ত্বে¡ও বিনামূল্যে বিতরণকৃত ভিজিডি’র খাদ্য সহায়তা পান না ওই মহিলা। সরকারী খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ৩০০ কেজি চাল ইউপি চেয়ারম্যান ওমর আলী আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রকৃত প্রাপক তার প্রাপ্য চাল আনতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান খারাপ আচরন করেন বলেও ভূক্তভোগীর অভিযোগ।
ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের সিরাজ হোসেনের ছেলে শাহাজুলের বয়স্ক ভাতার কার্ডের নকল নমিনি সাজিয়ে চৌকিদার মহিবুল ইসলামকে নকল নাতি সেজে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে চেয়ারম্যান ওমর আলী আত্মসাত করেন। এ কাজে সাহায্য করেন মিরপুর উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ফিল্ড সুপারভাইজার অসিত কুমার বিশ্বাস।
ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য রাজিয়া খাতুন চেয়ারম্যানের যোগসাজশে তার নিজ স্বামী মোঃ ইদ্রিসের নামে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড বানিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এছাড়াও বয়স্ক ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রেও নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায় ঐ ইউপি চেয়ারম্যান ওমর আলীর বিরুদ্ধে।
কুর্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওমর আলী জাতীয় সমাজত্রান্ত্রিক দল (জাসদ) সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন; তবে ওই ইউনিয়নে নতুন করে কমিটি না হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর আলীর দলীয় কোন পদ নেই বলে নিশ্চিত করেন মিরপুর উপজেলা জাসদের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক কারশেদ আলম।