কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় ঝাউদিয়া শাহী মসজিদের মানতের মাংস ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কবির খান (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ওসি মুস্তাফিজুর রহমান রতন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত কবির খান কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া শাহী মসজিদপাড়া এলাকার মৃত মান্নান খানের ছেলে। তিনি কাতারে ছিলেন। ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। ১৬ সেপ্টেম্বর তার পুনরায় কাতার যাওয়ার কথা ছিলো।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঝাউদিয়া এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক শাহী মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে বেশ কয়েকবার মারামারি হয়েছে। বর্তমানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদাধিকার বলে মসজিদটির সভাপতি। তবে ওই মসজিদে প্রতি শুক্রবার জেলা ও জেলার বাইরে থেকে বিভিন্ন মানুষ শিরনি (মানত) নিয়ে আসেন। এছাড়া অন্যান্য দিনও শিরনি আসে। শনিবার সেখানে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এলাকা থেকে কয়েকজন আসেন। তারা মানত হিসেবে ৪ কেজি খাসির মাংস দেন। সেই খাসির মাংস ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে মসজিদসংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা আসাদ চৌধুরী ও মুরাদ চৌধুরী পক্ষের মধ্যে বাগবিত-া হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় কাতারপ্রবাসী কবির খান সংঘর্ষ ঠেকাতে গেলে লাঠির আঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে ঝাউদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কেরামত আলী বিশ্বাস বলেন, মানতের মাংস ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের সংঘর্ষ হয়। লাঠির আঘাতে কবির খানের মৃত্যু হয়েছে।
ওসি মুস্তাফিজুর রহমান রতন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ দেশের অন্যতম একটি প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন। জেলা সদরের ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত বলে গ্রামের নাম অনুসারে এই মসজিদ ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ নামে পরিচিত।
ইউএনও সাধন কুমার বিশ্বাস বলেন, মাংস ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আইনগতভাবে সবকিছু করা হচ্ছে। মসজিদ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।