কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া জেলায় কর্মরত একজন সংবাদকর্মী অর্পন মাহমুুদ। গত শুক্রবার তার সহধর্মীনিসহ ২১ জন ডাক্তার, নার্স করোনা শনাক্ত হলে তাদের ঢাকা বি আর বি হসপিটালে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি নিজেও হোম কোয়ারেন্টাইনে। কিন্তু গত কয়েকদিন চেষ্টা করেও তিনি তার করোনা পরীক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বারবার সময় দেয়ার পরও কোন ব্যবস্থা নেইনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে তিনি তার ফেসবুকে কষ্টের কথাগুলো পোষ্ট করেছেন। ফেসবুক থেকে হুবহু তুলে ধরা হলো-“দয়া করে ভুল বুঝবেন না। আমি আমার প্রাণের কুষ্টিয়াবাসীকে সারাক্ষন সতর্ক করে এসেছি, ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় এসে নমুনা পরীক্ষা না করার কারনে প্রিয় মানুষের কাছে আজ আমি কিছুটা আতংকের কারন হয়ে দাড়িয়েছি । এই জন্য সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। গত শুক্রবার আমার কাছের মানুষটিসহ ২১ জন ডাক্তার, নার্স করোনা শনাক্ত হলে তাদের ঢাকা বি আর বি হসপিটালে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। আমার মিসেসকেও কোয়ারেন্টাইনে নেয়ার পর ওই দিনই আমার পরীক্ষা করার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু আমাকে জানানো হয় হোম কোয়ারেন্টাইনে থকতে এবং কোন উপসর্গ দেখা দিলে তার পর তারা পরীক্ষা করাবে। কিন্তু আমার মনে হয়েছে এই মুহুর্তে আমার পরীক্ষা করা জরুরী। আমার পরীক্ষার বিষয়ে অবহেলার কারনে সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগছিলাম, পরে কুষ্টিয়া সদর থানার ওসি ও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আর এম ও কে বিষয়টটি অবগত করি। কয়েকজন সাংবাদিক বন্ধুও আর এমও এর সাথে আলাপ করে আমাকে দ্রুত চলে আসার জন্য জানান। আমি পিপিই পড়ে সতর্কতার সাথে ওই দিন গত শুক্রবার রাতেই এম্বুলেন্স যোগে কুষ্টিয়া পৌছাই। সকলের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সোজা হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে থেকে পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট কি আসে তার পর বাসায় ফিরবো। কিন্তু কুষ্টিয়া পৌছানোর আগে জানতে পারি হাসপাতালতে দুইজন করোনা রোগী রাখা হয়েছে। যে কারনে আরএমও আমাকে নিজ বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন এবং বাসায় এসে নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে জানান। আমি বাসায় এসে কোয়ারেন্টাইনে থাকি এবং আমার নমুনা পরীক্ষা না হাওয়া পর্যন্ত কোন আতœীয় স্বজন বা প্রতিবেশী আমার সাথে দেখা করতে যেনো বাসাতে না আসে সেজন্য বড় ভাই সমাজ প্রধানের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেয়। সকালে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক বড় ভাই আনিসুর জামান ডাবলু ভাইয়ের মাধ্যমে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত মহাদয়কে অবগত করি। তিনি ওই দিনই নমুনা নেয়া হবে বলে জানান এবং আরএমও কে বলেন, কিছুক্ষন পর আর এম ও আমাকে ফোনে জানান, ওই দিন আর সম্ভব হচ্ছে না, পরের দিন সকালে টিম এসে আমার বাসায় এসে নমুনা নিয়ে যাবেন। গতকাল আর এম ও জানান, মেডিক্যাল টেকনলোজিষ্ট যিনি নমুনা নিবেন তিনি নিজেই অসুস্থ। দেখি অন্য কাউকে দিয়ে আজকেই নমুনা যায় কি না। এভাবে গতকালও কেটে গেছে জানিনা এভাবে আর ক’দিন নমুনা দেয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। পরীক্ষা না হাওয়া পর্যন্ত এলাকাবাসীও আমাকে নিয়ে কিছুটা আতংকিত! অনেকেই সার্বক্ষণিক ফোনে সাহস যোগাচ্ছেন খোজ খবর নিচ্ছেন। তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। তবে আমার শরীর সম্পন্ন সুস্থ এবং কোন উপসর্গ নেই তবুও কেন জানিনা পরীক্ষা না করানো পর্যন্ত নানা দু:চিন্তা ভীর করছে! সবার কাছে ক্ষমা প্রর্থণা করে আমার ও আমার সহধর্মিনীর জন্য দোয়া চাইছি। আল্লাহ্ সকলকে এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করুন, আমিন।