হাটবোয়ালিয়া প্রতিনিধি: করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আসাবুল হক ঠান্ডুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১০টায় হাটবোয়ালিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়। আসাবুল হক ঠান্ডুর জানাজা নামাজে জেলা ও উপজেলা আ.লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও এলাকার সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। এসময় মরহুম আসাবুল হক ঠান্ডুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
এসময় তিনি বলেন, আসাবুল হক ঠান্ডু আ.লীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। তার কোনো লোভ লালসা ছিলো না। তার একটিই লোভ ি ছিলো মানুষের উপকার করা, সে যে স্কুলের সভাপতি ছিলো সেই স্কুলের উন্নতি করা। তাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চিনি। সে ব্যক্তিগতভাবে কোনো জিনিস চাইনি। তার ভেতরে সততা ছিলো। সে সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মতো সাহস খুব কম লোকের থাকে। এই এলাকায় এক সময় আ.লীগের লোকজন ছিলো না। আসাবুল হক ঠান্ডুর চেষ্টায় ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়নে আমরা সংগঠনের দিক থেকে ভালো অবস্থানে আছি। কথা বলে তো লাভ নেই ঠান্ডুকে তো ফিরে পাবো না। তবে, একটা কথা বলি দলের মানুষ হিসেবে ঠান্ডুর বিকল্প নেই। আমরা জেলার রাজনীতি করি; কোন নেতা লোভ বা নির্লোভ আমাদের নখদর্পনে আছে। ঠান্ডুর মতো ভালো মানুষ এই সমাজে খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। আমরা এমন একজন মানুষ হারালাম যার গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না। ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়নবাসী একজন ভালো মানুষকে হারালেন ।
জানাজা নামাজে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিযাজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুজ্জামান বিশ্বাস লিটু, জেলা আ.লীগের সদস্য জজকোর্টের পিপি অ্যাড. বেলাল হোসেন, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফিন আলম রনজু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক, আলমডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র হাসান কাদির গণু, আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার, আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবীর, মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি জিনারুল ইসলাম বিশ্বাস, ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাওসার আহম্মেদ বাবলু, গাংনী ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের, খাদিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মন্ডল, বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মন্টু, উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি বিশিষ্ঠ শিক্ষানুরাগী লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিয়ার রহমান, ক্রীড়া সম্পাদক বিআরডিবি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মহিদ, হাটবোয়ালিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, এনামুল হক, মফিজুর রহমান, প্রভাষক আব্দুর রহিম, মতিউল হুদা, তোফাজ্জেল হোসেন, আব্দুল মান্নান, হুমায়ুন কবির, মোজাম্মেল হক, জেলা পরিষদের সদস্য কাজল রেখা, জেলা পরিষদের সদস্য আবু মুসা, জেলা পরিষদের সদস্য রাকিবুল হাসান, জেলা পরিষদের সদস্য শফিকুল আলম নান্নু, জেলা পরিষদের সদস্য মুসাবুল ইসলাম লিটন, জেলা পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম সাহান, মিরপুর মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন, ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আ. মালেক, মুক্তিযোদ্ধা খোশদেল আলম, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম মাস্টার, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সাজ্জাদুল ইসলাম স্বপনসহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আ.লীগের সকল নেতাকর্মী ও হাটবোয়ালিয়া স্কুল এন্ড কলেজের সকল শিক্ষক কর্মচারী। জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন মাওলানা এরশাদ নোমানী।
উল্লেখ্য, করোনায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আসাবুল হক ঠান্ডু গত ২৭ আগস্ট বিকেল ৪টায় ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। আসাবুল হক ঠান্ডু চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হাজি মৃত সিদ্দিকুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে। সম্প্রতি তিনি করোনাভাইরাস পজিটিভ হলে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত ১৮ আগস্ট তাকে ঢাকা ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পপুলার হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।