স্টাফ রিপোর্টার: একুশে পদকপ্রাপ্ত মরমী কবি খোদা বকশ শাহের স্মরণে চুয়াডাঙ্গায় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কোর্টপাড়ায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চত্বরে এ আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আফসান ফেরদৌসীর সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরীন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এসময় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান ও কবিপুত্র কণ্ঠশিল্পী আব্দুল লতিফ শাহ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এসময় আব্দুল লতিফ শাহকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সৌম্যজ্যোতি শ্রুতি।
আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি সাজিয়া আফরীন বলেন, খোদা বকশ জীবনে ৯৫০টি গান রচনা করেছেন। যা তা ব্যাপার নয়। আমরা সারাজীবনে চেষ্টা করেও দুটি গান লিখতে পারি না। তিনি মঞ্চে উঠলে গান শুরু করতে পারতেন। তার জীবন বোধের গভীরতা। সেই জায়গাগুলো চিন্তার বিষয়। তিনি আসলে স্বশিক্ষিত ছিলেন। সৃষ্টিকর্তার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করা। এ বিষয়গুলো কিন্ত যে কারোর মাথায় আসে না। হুট করে চিন্তা করলে আসে না। আমরা যদি সৃষ্টিতত্ত্ব ও জীবনতত্ত্ব নিয়ে চিন্তা করি তাহলে এ ধরণের গান করা সম্ভব। তিনি আমাদের সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে দিয়ে গেছেন। চুয়াডাঙ্গাকে সমৃদ্ধ করেছেন। বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলা একাডেমিকে শিক্ষকতা করে সমৃদ্ধ করেছেন। তার ছাত্র-ছাত্রীরা রয়েছেন। একটা জিনিসের অভাব রয়েছে। এখনও প্রচার-প্রচারণা হয়নি। পড়াশুনার সুযোগ রয়েছে। লালনকে নিয়ে কুষ্টিয়ায় ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে। খোদা বকশ শাহকে নিয়ে গবেষণার সময় এসেছে। গান গাইলেই গান হয় না। অন্তরে ধারণ করতে হয়। ইন্ডিয়ান আইডল দেখি। শিশুরা কি সুন্দর গান করছে। সেই জায়গাগুলো তৈরী করতে হবে। যখন আমরা কিছু করছি তা অন্তরে ধারণ করতে হবে। খোদা বকশ শাহের জন্মদিনের আয়োজন সফল হোক। তার সাহিত্য কর্মের সুযোগ্য মর্যাদা দিতে পারি।
প্রসঙ্গত: মরমী কবি খোদা বকশ শাহ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের জাহাপুর গ্রামে ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ (১৯২৮ খ্রি:) ৩০ চৈত্র জন্মগ্রহণ করেন। ১৩৯৬ বঙ্গাব্দের (১৯৯০ খ্রিস্ট্রাব্দের ১৫ জানুয়ারি) ১ মাঘ খোদা বকশ শাহ ইহলোক ত্যাগ করেন। খোদা বখশ শাহ ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে যোগদান করেন। এখানে তাকে লালন-সঙ্গীতের শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়। ১৯৮৫ সালে বাংলা একাডেমি খোদা বখশ শাহকে বাংলা একাডেমির ‘ফেলো’ পদ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ১৯৯১ সালে খোদা বকশ শাহকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে। তার শিষ্যরা প্রতিবছর তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মরমী কবি খোদা বকশ শাহের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।