কুষ্টিয়ায় দিনদুপুরে শিশুসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘাতক পুলিশের এএসআই সৌমেন রায়। তার গ্রামের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলায়। রোববার দুপুরে শহরের কাস্টম মোড় আসমা খাতুন তার সাত বছর বয়সী ছেলে রবিন ও শাকিল নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেন তিনি।
নিহত আসমাকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন সৌমেন রায়। তবে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহত আসমা খাতুনের সঙ্গে সৌমেনের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি তার পরিবার বা শ্বশুরবাড়ির পরিবারের কেউ জানেন না। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৌমেন বলেছেন, নিহত যুবক শাকিলের সঙ্গে তার স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল। তাই তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। সৌমেন খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত। সৌমেন রায়ের ভাই বলেছেন, সৌমেন পারিবারিকভাবে ২০০৫ সালে পাশের গ্রামে বিয়ে করেন। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি খুলনায় থাকেন। সেই স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো নারীর সঙ্গে সৌমেনের বিয়ের বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রীর বিষয়টি আমরা খবরে দেখেই প্রথম জেনেছি। এমনকি বিষয়টি সে তার স্ত্রীকেও জানায়নি। আমরা সবাই আজ প্রথম জানলাম। আমাদের ধারণা, কুষ্টিয়ায় কর্মরত অবস্থায় হয়তো আসমার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় সে। তার বাবা অনেক বছর আগে মারা গেছেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সৌমেন মেজ। পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর ২০০৫ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। সেই পরিবারে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়ে ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছেলে রয়েছে। সৌমেনের শ্বশুর জানান, তার মেয়ের সঙ্গে সুখের সংসার ছিল সৌমেনের। তবে দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে কিছুই জানা ছিল না তাদের।
প্রকাশ্যে স্ত্রী-সন্তান ও যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পুলিশের এএসআই সৌমেনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। নিহত শাকিলের পিতা মেজবার রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। রবিবার (১৩ জুন) দিবাগত রাত ১১টার পর মামলাটি রেকর্ডভুক্ত হয়। এদিকে নিহতদের লাশের ময়নাতদন্ত কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনজনের প্রত্যেকের মরদেহে দুইটি করে গুলির স্পষ্ট চিহ্ন ছিল বলে হাসপাতালের আরএমও ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডাক্তার তাপস কুমার সরকার জানান। তবে দেহ ভেদ করে প্রত্যেকটি গুলি বেরিয়ে গেছে বলেও ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন।
পরকীয়া সহ্য করতে না পেরে দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার পুত্র এবং স্ত্রীর বর্তমান প্রেমিককে প্রকাশ্যে দিবালোকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে ওই পুলিশ কর্মকর্তা। লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে রোববার বেলা ১১টার কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড় এলাকায়। ঘাতক সৌমেন কুমার খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত। নিহতরা হলো- স্ত্রী আসমা খাতুন, তার পুত্র রবিন ও প্রেমিক শাকিল হোসেন।