চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গায় এবি পার্টির আলোচনাসভায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ
গণঅভ্যুত্থানের পরাজিত শক্তিকে রাজনীতি করতে দেয়ার মানেই ১৪শ’ শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করা
স্টাফ রিপোর্টার: গণঅভ্যুত্থানের পরাজিত শক্তিকে রাজনীতি করতে দেয়ার মানেই হচ্ছে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ১৪শ’ শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করা, চব্বিশ সালের মানুষ যারা প্রতিবন্ধী হয়েছে, ৬০০ মানুষ চোখ হারিয়ে অন্ধ হয়ে গেছে তাদের জীবনের সাথে বেইমানি করা। তাই আমরা বোধ করছি গণশুনানির মাধ্যমে ও জনগণের মতামতের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। তার আগ পর্যন্ত তাদের নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগ দেয়া উচিত নয়। এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ শনিবার চুয়াডাঙ্গায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগকে তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকার পতনের পর আমাদের দাবি দাওয়া একটা বড় ইস্যু হয়ে গেছে। যেহেতু গত ১৬ বছর দাবি দাওয়া ও চাওয়ার কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছিলো না। কিন্তু বর্তমান সরকার আসার পর আমরা দেখেছি প্রায় দুইশোর মতো দাবি দাওয়ার আন্দোলন এই সরকার অত্যন্ত গণতান্তিক পন্থায় হ্যান্ডেল করেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের হোটেল ভিআইপি নামক হোটেলের তৃতীয় তলায় আয়োজিত এবি পার্টির মতবিনিময় ও আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। ওই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি। আমার বাংলাদেশ এবি পার্টির চুয়াডাঙ্গা জেলার আহ্বায়ক আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন রানাসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় বিশিষ্টজনদের সাথে মতবিনিময় করলেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গার স্থানীয় হ্যামলেট ক্যাফেতে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে আলমডাঙ্গার বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্যারিস্টার ফুয়াদ উপস্থিত অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান এবং আলমডাঙ্গাবাসীর আন্তরিকতা ও উদারতার প্রশংসা করেন। তিনি এবি পার্টির প্রতিষ্ঠা, লক্ষ্য ও রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেন। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবি পার্টির গৃহীত নীতিমালা ও কর্মসূচি তুলে ধরেন। ব্যারিস্টার ফুয়াদ তার বক্তব্যে বলেন, দেশের উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। এবি পার্টি বিশ্বাস করে, সাধারণ মানুষের স্বপ্ন, সম্ভাবনা ও সংকটকে সামনে রেখেই রাজনীতি করতে হবে। তিনি আরো জানান, এবি পার্টি জনসম্পৃক্ত রাজনীতির একটি নতুন ধারা প্রবর্তন করতে চায়, যেখানে রাজনীতিবিদ এবং নাগরিকের মধ্যে সরাসরি সংলাপ ও সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা স্থানীয় সমস্যা, উন্নয়ন ভাবনা এবং জাতীয় রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ও মতামত ব্যক্ত করেন। ব্যারিস্টার ফুয়াদ প্রত্যেক বক্তব্য গভীর মনোযোগের সাথে শোনেন এবং তাদের অভিমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, জনগণের কথা শোনা ও সেই অনুযায়ী নীতিনির্ধারণ করা এবি পার্টির অন্যতম অঙ্গীকার। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তরপর্ব ছিল, যেখানে মুক্তভাবে মতপ্রকাশ করেন। উপস্থিত অতিথিরা এবি পার্টির এমন জনগণমুখী উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরণের মুক্ত সংলাপের আয়োজন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
চুয়াডাঙ্গা জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, ব্যারিস্টার নোমান, মুফতি মাওলানা ইমদাদুল হক, মাওলানা শাফায়েত-উল ইসলাম হিরো, পান্না চৌধুরী প্রমুখ। মুসাব তাওহীদ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। এদিকে, মতবিনিময় সভার পূর্বে ব্যারিস্টার ফুয়াদ ঐতিহ্যবাহী আলমডাঙ্গার দ্বিতল স্টেশন পরিদর্শন করেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.