মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের নারী ও শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসা সেবা বন্ধ

হাসপাতাল সুপার বললেন সব বিষয়ে সাংবাদিকদের আসার দরকার নেই

মেহেরপুর অফিস: রোগীর স্বজন ও রাজনৈতিক কর্মীদের সাথে চিকিৎসকের বাগবিত-ার জেরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালে সুপার শাহরিয়ার শায়লা জাহান সাময়িক চিকিৎসা সেবা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বলেছেন সব বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের হাসপাতালে আসার দরকার নেই। গতকাল শনিবার সকালে মেডিকেল অফিসার ডা. মাহাবুব রহমানের সাথে এক রোগীর স্বজনদের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় রোগীর স্বজনদের সাথে চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী। এরপর ডা. মাহবুব রহমান মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের রাউন্ড ও চিকিৎসা সেবা বন্ধের ঘোষণা দেন। এতে সরকারি হাসপাতালে সেবা না পেয়ে অনেক রোগী বাধ্য হয়ে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। সরেজমিনে হাসপাতালে যেয়ে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সকালে এইচ ডি ইউ বিভাগে মুমূর্ষ অবস্থায় একজন রোগী আসে। রোগীটি কয়েকদিন আগেও একই বিভাগে ভর্তি ছিলো। ওয়ার্ডে চিকিৎসকের রাউন্ড ভিজিটের সময় মেডিকেল অফিসার মাহাবুব সেই রোগীর স্বজনদের কাছে পূর্বের দেয়া ব্যবস্থাপত্র দেখাতে বলেন। পূর্বের ব্যবস্থাপত্র দেখাতে না পারলে চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হবে না বলে জানান ডা. মাহবুব। এ সময় রোগীর স্বজনরা কেন চিকিৎসা সেবা হবেনা জানতে চেয়ে চিকিৎসকের সাথে কথা কাটা কাটি শুরু করে। একপর্যায়ে তাদের সাথে যুক্ত হন স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি কর্মী। এ সময় ডা. মাহাবুব হাসপাতালে তার জন্য বরাদ্দকৃত চেম্বার ২২৪ নম্বর রুমে যেয়ে ঘোষনা দেন চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে। এই ঘোষণার পর থেকেই সাময়িকভাবে হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। তবে হাসপাতালের নার্সরা রুটিন চেকআপ অব্যহত রেখেছেন।
মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন মিজানুর রহমান অপু বলেন, ‘আমার স্ত্রী আজ সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর থেকে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। দুপুর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক এই ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবা দিতে আসেননি।’ শামিমা নামের অপর একজন বলেন, ‘আমার মায়ের অবস্থা খারাপ। এখানে সারা দিন কোন চিকিৎসা না পাওয়াতে হাসপাতাল ছেড়ে ক্লিনিকে চলে যাচ্ছি। আমার মতে আরো অনেকজনই এই ওয়াড ছেড়ে চলে গিয়েছে।’ মেডিকেল অফিসার ডা. মাহাবুব রহমান বলেন, ‘এইচডিইউ বিভাগে বহিরাগতসহ রোগীর স্বজনরা খারাপ আচরণ করেছে এবং হুমকি দিয়েছে। এজন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে সাময়িকভাবে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে রেখেছি।’ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. সউদ কবির মালিক বলেন, ‘সকালে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের কথা কাটাকাটির জেরে একটু সমস্যা হয়েছিল,এটুকু জানি। বিষয়টা নিয়ে হাসপাতাল সুপার কাজ করছেন। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকাতে আমি সকাল থেকেই আউটডোর এবং ইনডোরের রোগীদের ভিজিটে ব্যস্ত আছি।’ মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের সুপার শাহরিয়ার শাইলা জাহান বলেন, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন ডা. মাহাবুব। উনি রোগী না দেখাতে সাময়িক সমস্যা হয়েছে। তবে হাসপাতালের সব বিষয়ে সাংবাদিকদের নজর দেয়ার দরকার নেই। এমন করলে আমরা পারবোনা।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More