মুদি দোকানিকে পিটিয়ে হত্যা : রাতে লাশ নিয়ে সড়কে বিক্ষোভ

ঝিনাইদহের বাদপুকুরিয়ায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারি

ডাকবাংলা প্রতিনিধি: পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে কিল ঘুষিতে মোহাম্মদ আলী (৬৫) নামের এক মুদি ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদপুকুরিয়া পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ আলী একই গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একই গ্রামের আশকার আলী, তার স্ত্রী আয়েশা খাতুন ও পুত্র আশাদুলকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে, লাশ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন স্বজনরা। গতরাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের উত্তর নারায়ণপুরে ত্রিমোহনী মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বাদপুকুরিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের আশকার আলীর পুত্র আশাদুল ইসলাম মুদি দোকানদার মোহাম্মদ আলীর দোকানে ৮৪০ টাকা বাকি করে। দোকানদার মোহাম্মদ আলী একাধিকবার দোকান বাকির টাকা পরিশোধের তাগাদা দিলেও আশাদুল ইসলাম টাকা পরিশোধ করতে টালবাহানা করে। একপর্যায়ে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মুদি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী পাওনা টাকার জন্য আশাদুলের বাড়িতে যান। এ সময় আশাদুল ইসলাম, তার পিতা আশকার আলী এবং মা আয়েশা খাতুনের সাথে মোহাম্মদ আলীর বাকবিত-া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে দোকানদার মোহাম্মদ আলীকে উপর্যুপরি কিল ঘুষি মারতে থাকে তারা। এতে মোহাম্মদ আলী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে মোহাম্মদ আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে ঘটনার পরে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সদর থানা থানা পুলিশ হত্যা মামলা নিতে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। তারা জানিয়েছেন, দুপুর থেকে মামলা দায়েরের চেষ্টা করলেও পুলিশ নানান অজুহাত দেখিয়ে মামলা নিচ্ছে না। যে কারণে নিহতের স্বজনরা রাতেই লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ঘটনার পরে মামলা নিতে সদর থানা পুলিশ টালবাহানা করছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সড়ক অবরোধ করে লাশ নিয়ে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। নিহতের ছেলে মশিয়ার রহমান বলেন, পাওনা টাকা চাইতে গেলে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা যেন মামলা না করি, তার জন্য নানান রকম চাপ দেয়া হচ্ছে। থানায় গিয়ে মামলা দায়েরের চেষ্টা করলেও পুলিশ গড়িমসি করে মামলা নেয়নি। সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা না নেয়ার কোনো কারণ নেই। তারা মামলা নিয়ে এলে এজাহার সংশোধন করতে বলা হয়েছে। এরপর আর তারা আসেনি। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আশকার আলী, তার স্ত্রী আয়েশা খাতুন ও পুত্র আশাদুলকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা ঝিনাইদহের ডাকবাংলা বাজারের জনৈক আব্দুর রবের চালকলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। লাশ নিয়ে সড়ক আটকে বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া বলেন, বিক্ষোভ কেন করছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মামলা না নেয়ার মতো কিছু নেই। অবশ্যই মামলা নেবে পুলিশ। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More