চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলারের কার্যক্রম নেহালপুর ইউনিয়নে
ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও নেয়া হয়নি দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) সার ডিলার নেহালপুর ইউনিয়নে কার্যক্রম চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ইউনিয়ন বিভক্ত হবার পরেও চলছে কার্যক্রম। এতে ইউনিয়নের সাধারণ কৃষকদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ অনেকদিন আগেই বিভাজন হলেও এখনো কার্যক্রম নেহালপুর ইউনিয়নের হিজলগাড়ী বাজারে পরিচালিত হচ্ছে। ইউনিয়নের মাঝখানে সার ডিলার হলে কৃষকদের ভোগান্তি লাঘব হবে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। এছাড়াও রশিদ বা ভাউচার না দিয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করারও অভিযোগ উঠেছে। গত ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ সংবাদ প্রকাশের সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও তার কার্যকর কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
সরেজমিনে এলাকা সূত্রে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দর্শনা থানার অন্তর্ভুক্ত বেগমপুর ইউনিয়নের বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) সার ডিলার নেহালপুর ইউনিয়নে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ কৃষকদের। জনসেবা ও সুযোগ সুবিধা জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে ইউনিয়ন পরিষদের মাঝখানে ডিলার থাকার কথা থাকলেও বেগমপুরের ডিলারের কার্যক্রম চলছে নেহালপুর ইউনিয়নে। ইউনিয়ন বিভাজন করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে বেগমপুর ইউনিয়নের ডিলার হিজলগাড়ী বাজারে কোটালি রাস্তায় অবস্থিত। যেটা নেহালপুর ইউনিয়নের মধ্যে পড়ে। এতে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। চলতি মরসুমে সার সংকট ও ডিলার নিয়ে মরার ওপর খাড়ার ঘা এর মত অবস্থা হয়ে উঠেছে। সার নিয়ে যাতায়াতে কৃষকদের অতিরিক্ত মূল্য ও সময় দিতে হয়। অনেকটা লাভ পিঁপড়েই খাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে। বেগমপুর ইউনিয়নের নওদা হরিশপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক কৃষক জানান, ইউনিয়নের মাঝখানে ডিলার থাকলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়। অনেক কষ্ট করে সার আনতে হিজলগাড়ী যেতে হয়। আবার সারের দামও বেশি নেয়। ভাউচার বা রশিদ চাইলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বাধ্য হয়ে রশিদ ছাড়াই সার নিতে হয় তাদের। একই ইউনিয়নের ফুরশেদপুর গ্রামের কৃষক মৃত মুনতাজ হোসেনের ছেলে খোকন আলী বলেন, দূরে হবার কারনেই সরকারি সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এজন্য আমরা খুচরা দোকান থেকেই ক্রয় করি। আমরা সরকারি সুবিধা ও অর্থ লাঘব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এর আগে বেগমপুর ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি আব্দুল মুন্নাফ দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান, আসলেই কৃষকদের ভোগান্তি হয়। আমাদের গ্রাম থেকে ডিলারের দূরত্ব প্রায় ৭/৮ কি:মি:। আমরা চাই এটি আমাদের ইউনিয়নের মধ্যবর্তী জায়গায় হোক। তাহলে কৃষকদের তথা আমাদের সুবিধা হবে। এক ইউনিয়নের ডিলার অন্য ইউনিয়নে ব্যবসা করতে পারবে কী-না? জানতে চাইলে মেসার্স আকবার আলী বিসিআইসির সার ডিলারের ম্যানেজার বিপুল হোসেন জানিয়েছেন, এ রকম কোন নিয়ম নেই। ইউনিয়ন ভাগাভাগি হবার আগে ডিলার পয়েন্ট এখানে ছিলো।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিন বিনতে আজিজ দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, বিষয়টি আমরাও অবগত হয়েছি। আমরা অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানালেও তার কার্যকরী কোন পদক্ষেপ দেখতে পাইনি সাধারণ কৃষকরা। এদিকে সাধারণ কৃষকদের অভিযোগ, এর আগেও বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে তার কোন কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পারেনি। আসলে সাধারণ কৃষকদের দুঃখ বা দুর্দশা কারো নজরে পড়ে না।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর ১৮ তারিখ চুয়াডাঙ্গা থেকে বহুল প্রচলিত দৈনিক মাথাভাঙ্গায় সংবাদ প্রকাশ হলে কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসলেও পরবর্তীতে কোন কার্যকরী সমাধান হয়নি। তাই বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান গ্রামের সাধারণ কৃষকরা।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.