ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: প্রায় দুইমাস ধরে ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া সীমান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া গড়াই নদীতে একাধিক কুমিরের দেখা মেলায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। তবে এর মধ্যে একটি বিশাল আকৃতির কুমির লোকালয় থেকে ধরেছে জনতা। গত পরশু বুধবার রাত ৮টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের গড়াই নদী পাড়ের সুবিদ্দা গোবিন্দপুর গ্রামের একটি বাড়িতে কুমিরটি উঠার চেষ্টা করে। এ সময় গ্রামবাসী দেখতে পেয়ে মাছধরা জাল দিয়ে কুমিরটিকে ঘেরাও করে ধরে ফেলে। খবর পেয়ে আশপাশ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ কুমিরটি দেখার জন্য ভিড় করে। এছাড়া ভ্যানে করে নিয়ে এলাকায় আনন্দ মিছিল করে তারা। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, কুমিরটি গড়াই নদী থেকে প্রায় ৪০০ ফুট উপরে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খিলাফত মিয়ার বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। সে সময় কুমিরটি পাতার ওপর দিয়ে যাওয়া অবস্থায় খড়-মড় আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। এরপর মাছধরা জাল দিয়ে কুমিরটিকে ঘেরাও করে ধরে ফেলে তারা। পরে কুমিরটিকে মজবুত করে বেঁধে এলাকায় আনন্দ মিছিল করে এবং এটি দেখার জন্য কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমায়। ইনসান আলী নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, দীর্ঘ প্রায় দুইমাস ধরে আমরা গড়াই নদী পাড়ের মানুষ কুমির আতঙ্কে ছিলাম। কুমিরটা প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট লম্বা হবে। তবে পুরুষ না মেয়ে তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে আরও কমপক্ষে তিনটি কুমির আছে বলে ধারনা করছি। শৈলকুপা বনবিভাগের কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান জানান, কুমিরটি এলাকাবাসী ধরে প্রথমে খুলুমবাড়িয়া স্কুলমাঠে রাখে। তারপর ভ্যানে করে শৈলকুপা থানায় আনা হয়। রাত ৩টার দিকে খুলনা বিভাগীয় বন অধিদপ্তরের সদস্যরা এসে কুমিরটি নিয়ে গেছে। তবে কুমিরটি ডিম পাড়ার জন্য উপরে উঠেছিল এটি আমরা ধারনা করছি। শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান জানান, কুমির আটকের খবর পেয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও কুমিরটিকে জনতার হাত থেকে জীবিত উদ্ধার করতে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। কুমিরটি দেখতে কয়েক হাজার মানুষ এসেছিল। পরে কুমিরটির নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রসঙ্গত, গড়াই নদীর ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের খুলুমবাড়িয়া ও রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের কেওয়াগ্রাম ঘাট অংশে প্রায় দুই মাস ধরে চারটি কুমিরের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছিল। যার ফলে স্থানীয় জেলে ও নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে কুমির আতঙ্ক দেখা দেয়। ফলে নদীতে গোসল বা অন্যান্য কাজ করতে কেউ সাহস পাচ্ছিল না। কারণ কুমিরের উপস্থিতি দেখে সবাই ভীত। স্থানীয়রা জানান, গড়াই নদীতে একটি বড় আকারের কুমির ও তার সঙ্গে তিনটি বাচ্চা কুমিরের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বড় কুমিরটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭/৮ হাত হবে। এর মধ্যে বুধবার রাতে বড় কুমিরটি ধরা পড়েছে। তবে এতেও নদীপাড়ের মানুষ ও জেলেরা আতঙ্কিত হয়ে আছেন। কুমিরের উপস্থিতিতে গোসল, মাছ ধরা বা নদীতে কোনো কাজ করা যেন অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
ঝিনাইদহে পূর্বাশা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত
পরবর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.