স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি’র স্মার্ট কার্ড নিয়ে লংকাকান্ড ঘটছে। জেলায় মোট টিসিবি কার্ডের সংখ্যা ৭৪ হাজার ৫৫৬টি। এর মধ্যে ঢাকা থেকে এসে পৌঁছিয়েছে ৪২ হাজার ১৩৩টি কার্ড। এখনও কার্ড পাওয়া যাবে ৩২ হাজার ৪২৩টি কার্ড।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় নাগরিকদের মোট টিসিবির স্মার্ট কার্ড পাওয়ার কথা ৮ হাজার ৬৮৮টি। এর মধ্যে পাওয়া গেছে ২ হাজার ৬৫০টি কার্ড। ইতোমধ্যে ২ হাজার ২০০ কার্ড বিলিও করা হয়েছে। তবে, কিছু কার্ডে মোবাইল নাম্বার অথবা অন্য কিছু ত্রুটি থাকায় গ্রাহকদের স্মার্ট কার্ড নিতে মাইকিং করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। ফলে, গতকাল রোববার বেলা ১০টার পর থেকে দিনভর জনসাধারণরে ভীড় লক্ষ্য করা গেছে পৌরসভা ভবনে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় ৬ হাজার ৩৮টি কার্ড এখনও ঢাকা থেকে এসে পৌঁছায়নি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, টিসিবির স্মার্ট কার্ড চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৮ হাজার ৫৩৩টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১২ হাজার ৪৪৪টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ১১ হাজার ২১১টি এবং জীবননগর উপজেলায় ৯ হাজার ৯৪৫টি কার্ড পাওয়া গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৪৫ জন ডিলারের মাধ্যমে টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হয়ে থাকে। তারা হলেন, চুয়াডাঙ্গার মোহাম্মদী শপিং কমপ্লেক্সের মেসার্স মা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের একরামুল হক, ফার্মপাড়ার মেসার্স মাওয়া ট্রেডার্সের আজিম উদ্দিন, সরোজগঞ্জ বাজারের মেসার্স ভাই ভাই রাইচ মিলসের ইব্রাহিম আলী, ইসলামপাড়ার মেসার্স রহিত এন্ড রাফি ট্রেডার্সের হামিদুর রহমান, হাতিকাটার মেসার্স হাসান এন্টারপ্রাইজের আছমাউল হক, ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্টপাড়ার মেসার্স এল এস ট্রেডার্সের খলিলুর রহমান, কেদারগঞ্জ নতুন বাজারের মেসার্স আশিক ট্রেডার্সের আব্দুল কাদের, হায়দারপুরের মেসার্স টি কে কর্পোরেশনের আল মার্জিয়া ফেরদৌস, সিনেমা হলপাড়ার মেসার্স মো. আমান উল্লাহ, কোর্টপাড়ার মেসার্স রোকন স্টোরের আলমগীর শরীফ, বহালগাছীর মেসার্স অপরাজিতা এন্টারপ্রাইজের রুহুল আজম মৃধা, ছয়ঘরিয়া গ্রামের মেসার্স বন্ধন ট্রেডার্সের আমিনুল ইসলাম, সরোজগঞ্জ বাজারের মেসার্স শান্তি স্টোরের ইসমাইল হোসেন ও হাতিকাটার মেসার্স জোয়ার্দ্দার ট্রেডার্সের সুফিয়া জোয়ার্দ্দারসহ মোট ১৪জন ডিলার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় টিসিবি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
জীবননগর উপজেলায় নারায়নপুর মোড়ের মেসার্স সাগর বিশ^াস, চ্যাংখালী রোডের মেসার্স সাইদুর রহমান, নারায়নপুর মেড়ের মেসার্স মুদি স্টোরের রহিদুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা রোডের মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজের মিল্টন মিয়া, পোস্টঅফিসপাড়ার মেসার্স শরীফুল ইসলাম, জীবননগর বাসস্ট্যান্ট এলাকার মেসার্স এএসটি ট্রেডার্সের শাহ আলম, নারায়নপুর মেড়ের মেসার্স আয়েশা মুদি স্টোরের শরিফুল ইসলাম, ইসলামপুর মোড়ের মেসার্স শফি মুদি স্টোরের শফিকুল ইসলাম, থানা মোড়ের মেসার্স খাদিজা মুদি স্টোরের খাদিজা খাতুন, লক্ষ্মীপুর মিলপাড়ার মেসার্স সরকার মুদি স্টোরের আব্দুল মোতালেব, চ্যাংখালী রোডের মেসার্স জামান মুদি স্টোরের জাহিদুল ইসলাম মিলান, চ্যাংখালী রোডের মেসার্স অনিক মুদি স্টোরের জিহাদ হোসেন, মহানগর উত্তরপাড়ার মেসার্স লুবনা ট্রেডার্সের মো. মিঠুন, উথলীর মেসার্স আলিফ ট্রেডার্সের মো. সলিমুল্লাহ মোট ১৪ জন ডিলার টিসিবি পণ্য সরবরাহ করছেন।
আলমডাঙ্গা উপজেলায় আলমডাঙ্গার মেসার্স কাকুলি ট্রেডার্সের সিরাজুল ইসলাম, কাচারী বাজারের মেসার্স হেলাল ট্রেডার্সের ফজলুল হক, আনন্দধামের মেসার্স শাহ ট্রেডার্সের আলিমুর রেজা, জাহানপুরের মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজের সেঁজুতি শারমিন, হারদীর মেসার্স সুপ্তি এন্টারপ্রাইজের সাজ্জাদুল ইসলাম, কৃষ্ণপুরের মেসার্স নাইমুর স্টোরের মো. স্বপন, জেহালার মেসার্স লিটন ট্রেডার্সের কামরুল হাসান, স্টেশন রোডের আল মদিন গ্রোসারীর রুহুল কুদ্দুসসহ মোট ৮জন ডিলার টিসিবি পণ্য সরবরাহ করছেন।
দামুড়হুদা উপজেলার দশমীর মেসার্স জব্বার এন্টারপ্রাইজের রোকসান খাতুন, চৌরাস্তার মোড়ের মেসার্স আলী ট্রেডার্সের আলী কদর, দর্শনার মেসার্স এ বি ট্রেডার্সের আল আমিন, কুতুবপুরের মেসার্স তামিম স্টোরের শফিকুল ইসলাম, জুড়ানপুর বাজারের মেসার্স পূরব স্টোরের এখলাছুর রহমান, হেমায়েতপুরের মেসার্স শহিদুল স্টোরের সহিদুল ইসলাম, দামুড়হুদা মাদরাসাপাড়ার মেসার্স রিয়াদ ট্রেডার্সের এস এম আব্দুর রকিব, দশমীর মেসার্স আবু সাইদ এবং চিৎলার মেসার্স রিয়া রিত্তি স্টোরের আব্দুর রাজ্জাক মোট ৯ জন ডিলার টিসিবি পণ্য সরবরাহ করছেন।
চুয়াডাঙ্গার চার পৌরসভায় মেয়রের অপসারণের পর প্রশাসক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। আবার চুয়াডাঙ্গার ৪১টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ২৪টি ইউপি চেয়ারম্যান আছেন। এর মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যান আছে ৫ জন। অপর ১৭টি ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি কর্মকর্তারা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে, টিসিবি স্মার্ট পেতে প্রতিনিয়ত জনসাধারণকে ভোগান্তির মধ্যে মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অবিলম্বে সকল ভোগান্তি দূর হবে এমনটি আশা ভুক্তভোগীদের।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম রেজাউল করিম জানান, এ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় ২ হাজার ৬৫০টি টিসিবি স্মার্ট কার্ড এসেছে। এখনও অনেক কার্ড আসেনি। এর মধ্যে ৮৫টি কার্ডে মোবাইল নাম্বার বা কিছু ত্রুটি থাকায় মাইকিং করা হয়েছিলো। অথচ, শতশত মানুষ পৌরসভায় ভীড় জমায়। কাগজপত্র সঠিক করে তাদের কার্ড বুঝে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আগে ফোন করে অনেককেই স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.