চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নীতিমালা বহির্ভূত নিয়োগের অভিযোগ

প্রকৃত দাবিদারসহ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি শিক্ষকদের : অধ্যক্ষের কক্ষে তালা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নীতিমালা বহির্ভূত নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি নীতিমালা বহির্ভূতভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে প্রকৃত দাবিদার চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের বিএম শাখার সহকারী অধ্যাপক মোসা. নাজনীন আরা খাতুনসহ বেশ কিছু শিক্ষক বিধি বহির্ভূতভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। এ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজে অধ্যক্ষের কক্ষে ও ক্লপসিবল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। পদবঞ্চিত শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের দাবি অবিলম্বে এই বিধি বহির্ভূত নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল না করা হলে বড় ধরণের কর্মসূচি দেয়া হবে। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার সকাল ১১টায় কলেজে মানববন্ধন করা হবে। পদ বঞ্চিত সহকারী অধ্যাপক (বাংলা) মোসা. নাজনীন আরা খাতুন বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী আমি যোগদানে জ্যৈষ্ঠ, জন্ম তারিখ অনুযায়ী জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞতার দিকসহ সকল বিষয়ে জ্যেষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, যেখানে বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাংলাদেশে এতগুলো তরতাজা প্রাণ ঝরে গেল সেখানে সেই বৈষম্যবিরোধী রক্তক্ষয়ী আন্দোলনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বৈষম্যের আশ্রয় নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নাজনীন আরা খাতুন আরো বলেন, বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাপনা নীতিমালার ১১.২৫ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, এমপিও ভুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়/ উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ এর প্রধান শিক্ষক/ অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে মাদরাসা/কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রভাষক (সাধারণ) জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক (সাধারণ) সহকারী অধ্যাপক (সাধারণ) এর পূর্বের এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা বিধি মোতাবেক গণনা যোগ্য হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ শাখা সচিবালায় ঢাকার সর্বশেষ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এর পরিপত্রের ‘গ’ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ হলে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সহকারী শিক্ষক/ জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক/ সহকারী অধ্যাপকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতম সহকারী শিক্ষক/জ্যেষ্ঠতম জৈষ্ঠ প্রভাষক/জ্যেষ্ঠ সহকারী অধ্যাপককে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। একই পরিপত্রের ‘ঘ’ ধারায় বর্ণিত আছে, জ্যেষ্ঠতম সহকারী শিক্ষক/জ্যেষ্ঠতম জ্যেষ্ঠ প্রভাষক/জ্যেষ্ঠতম সহকারী অধ্যাপক নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রথম এমপিওভুক্তির তারিখ, একই তারিখে এমপিওভুক্ত হলে যোগদানের তারিখ এবং যোগদানের তারিখ একই হলে বয়সের দিক থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষককে জ্যেষ্ঠতম গণ্য করতে হবে। একইভাবে একই বয়সের দুইজন হলে উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষককে জ্যেষ্ঠতম গণ্য করতে হবে। অথচ আমাকে ডিঙিয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে শামীমা সুলতানাকে (জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদার্থবিজ্ঞান) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যা খুবই পীড়াদায়ক।
চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মো. আবু রাশেদ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং (আজ বুধবার) তারিখে অবসরে যাবেন। অবসরজনিত অধ্যক্ষের শূন্যতা পূরণে কলেজ পরিচালনা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে অপেক্ষাকৃত জুনিয়র (জ্যেষ্ঠ প্রভাষক) শামীমা সুলতানাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজ পরিচালনা পরিষদের এডহক কমিটির সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে যিনি বিধি মোতাবেক যোগ্য তিনিই দায়িত্ব পাবেন।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More