সারাদেশে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার: চলতি মাসের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর আওতায় ১০ দিনে দেশের ৬৪ জেলায় জনসভা করবে দলটি। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির কথা জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রিজভী বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা এবং রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন জনদাবিতে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে রমজান শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে জেলা ও মহানগরে পর্যায়ক্রমে সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্টদের সহযোগীরা এখন প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রয়েছে, যারা ৫ আগস্টের পরিবর্তনকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি। এমন লোকদেরকে চিহ্নিত করতে না পারলে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের পক্ষে সফল হওয়া কঠিন। বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সব পদক্ষেপ সবার কাছে সাফল্য হিসেবে বিবেচিত নাও হতে পারে, কিন্তু এই সরকারের ব্যর্থতা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির ব্যর্থতা হিসেবেই পরিগণিত হবে।’ এ কারণে বিএনপি অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে সফল দেখতে চায়। কিন্তু সরকার নিজেদেরকে সফল দেখতে চায় কিনা —এটিও ভাবার বিষয় রয়েছে। সরকারের ‘কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপে’ কম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বাদ দিয়ে জনগণের নিত্যদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। রিজভী বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছে এবং ষড়যন্ত্রমূলক অডিও রেকর্ড প্রকাশের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে একের পর এক উসকানি দিচ্ছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার উসকানিতে ইতোমধ্যে গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে গুপ্ত হামলা, ঝটিকা মিছিল ও গণসংযোগ শুরু করেছে। গতকাল (৭ ফেব্রুয়ারি) ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে রক্তপিপাসু আওয়ামী দুর্বৃত্তরা গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর নারকীয় আক্রমণ চালিয়েছে। ১৫ জনের বেশি গুরুতর জখম হয়েছেন। পতিত সরকারের গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর ফ্যাসিস্টদের নিয়ে ভার্চুয়ালি মিটিং করে বলেছেন, ‘যে শহরে আমরা দিনের বেলা ঘুরতে পারি না সে শহরের কাউকে আমরা ঘুমাইতে দেব না’। লীগের নয়া প্রজেক্টের মাস্টারপ্ল্যানারদের একজন সে। এমন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীকে এখনো গ্রেফতার করতে না পারা সরকারের চরম ব্যর্থতা। গত ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গণহত্যাকারী আওয়ামী দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার ও বিচারের বিষয়ে যতটা কঠোর হওয়া দরকার ছিল, উল্টো বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ৫৭২ জন নেতা ও তার দোসরদের জামিন হয়েছে। ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ডিবি অফিসে নিয়ে ছয় কোটি টাকা চাঁদা আদায় চেষ্টার মামলায় গ্রেফতারের তিন দিনেই জামিনে মুক্ত হয়েছেন সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনের সিন্ডিকেটের প্রধান এসএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাদেক। গণহত্যার মামলার আসামিরা কীভাবে জামিন পাচ্ছে, আমরা সরকারের কাছে সেটির স্পষ্ট ব্যাখ্যা জানতে চাই।
উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা-নাগরিকদের গণঅভ্যুত্থানে বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালানো অপরাধীদের কতজন গ্রেফতার হয়েছে সরকারের কাছে সেটি জানতে চাই। সহস্রাধিক মানুষ হত্যা, হাজার হাজার পঙ্গু ও আহত হওয়ার এই বর্বরোচিত ঘটনা ও ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার সঠিক বিচার না হলে বাংলাদেশে ভবিষ্যৎ হয়ে পড়বে অনিশ্চিত।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More