ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের নৃশংসতা : পুলিশ পরিচয়ে আ.লীগ কর্মীকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের চানপাড়া গ্রামে কাওসার লস্কর (৫৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী ও পুলিশের সোর্সকে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার ভোর রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের লুতফর লস্করের ছেলে। জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে প্রায় ২০-৪০জন চানপাড়া গ্রামে কাওসার লস্করের বাড়িতে যায়। পুলিশ পরিচয়ে তারা কাওসারকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে পার্শ্ববর্তী রেললাইনের পাশে বন্ধগেট এলাকায় তার পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মামলা দেয়া, পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়া ছিলো কাওসারের প্রতিদিনের কাজ। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী ঘরে থাকতে পারতো না। বিনা কারণে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করতেন সাধারণ মানুষকে। তার বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা এনামুল হত্যার অভিযোগে মামলাও রয়েছে থানায়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। কয়েকদিন হলো বাড়িতে এসে বসবাস করছিলেন। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল লস্কর জানান, খবর পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে মনে হয়েছে পাশের কোথাও তাকে কুপিয়ে এখানে ফেলে রেখে গেছে। তখনো তিনি জীবিত ছিলেন কিন্তু কথা বলতে পারছিলেন না। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন। নিহতের স্ত্রী ওজুলা বেগম জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ২০ থেকে ৪০জন ব্যক্তি বাড়ির সামনে মোটরসাইকেলে এসে পুলিশ পরিচয় দেয়। পুলিশের কথা শুনে বাড়ির দরজা খুলে দিলেই বাড়িতে ঢুকে কাওসারকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর রাত ২টার দিকে তাকে চানপাড়া গ্রামের মাঠে রেললাইনের পাশের রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। তবে কারা তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে চিনতে পারেননি। তাদের সবার মুখ বাঁধা ছিলো বলে তিনি বলেন। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, কাওসারের শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসা শুরুর আগেই তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। কোটচাঁদপুর থানার ওসি কবির হোসেন মাতুব্বর জানান, টহল পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিবারের সহযোগিতায় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। তিনি আরও বলেন, তার বাড়িতে রাতে পুলিশের কোনো টিম যায়নি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More