এখন আমনের ভরা মরসুম। চাল আমদানিও করা হচ্ছে। ফলে বাজারে চালের সরবরাহ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতেও মিলারদের চালবাজিতে মিলপর্যায়ে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা। এতে পাইকারি আড়তেও চালের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। ভরা মরসুমেও চাল কিনতে বিড়ম্বনার শিকার হওয়ায় ভোক্তাদের হতাশা বেড়েছে। সাময়িক মজুতদারির কারণে চালের দাম বেড়েছে বলে বুধবার জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেছেন, চালের পর্যাপ্ত মজুত আছে। তদারকির মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে। এক বছর আগের একই ঘটনা আমরা ভুলিনি। তখন আমনের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি সরকারি গুদামে চালের মজুত ছিল পর্যাপ্ত; বাজারে এর সরবরাহও ছিলো পর্যাপ্ত। তারপরও ভরা মরসুমে তখন চালের বাজার ছিলো অস্থির। চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির নেপথ্যে যে সিন্ডিকেট সক্রিয়, এটি বহুল আলোচিত। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, পণ্যের দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমানোসহ নানা উদ্যোগ নেয়া সত্ত্বেও বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ধানের ভরা মরসুমেও একটি চক্র নানা কৌশলে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে। এতে বোঝা যায় এ চক্রের শেকড় কতো গভীরে। যেহেতু এ চক্র চালের বাজারে বারবার অস্থিরতা তৈরি করে, সেহেতু চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার।
বাজারে একাধিক সংস্থা তদারকির কাজে নিয়োজিত। প্রশ্ন হলো, ভোক্তারা এ থেকে সুফল পাচ্ছে না কেন? ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পণ্যের দাম বাড়লেই কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেন; কিন্তু যে স্তরে কারসাজি হয়েছে, সে স্তরে মনিটরিং হয় না। আমরা মনে করি, যে যে ক্ষেত্রে কারসাজি হচ্ছে, সব ক্ষেত্রে জোরালো মনিটরিং অব্যাহত রাখা দরকার। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে এখন মধ্যবিত্তও হিমশিম খাচ্ছে। সীমিত ও প্রান্তিক আয়ের মানুষ এর ফলে কতোটা অসহায় হয়ে পড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিভিন্ন পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর পাশাপাশি তা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে। নতুন শুল্ক-কর আরোপের ফলে সব শ্রেণির মানুষের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে। কয়েক মাস পর শুরু হবে রোজা। এখন থেকেই বাজার ব্যবস্থাপনার ত্রুটি দূর করতে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া না হলে ভোক্তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোয়াতে হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.