বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ ঊর্ধ্বমুখী বাজারে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তের ওপর চাপ আরও বাড়বে
স্টাফ রিপোর্টার: ফুটপাতে বা দোকানে আপেল, মাল্টা বা আঙুরের মতো ভিটামিনের চাহিদা মেটানোর ফলগুলো সাজানো থাকলেও কেনার আগে সক্ষমতার হিসাব কষতে হয় মধ্যবিত্তকে। আর নিম্নবিত্তের যেন ধরতেও মানা। আমদানি শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় ঊর্ধ্বমুখী বাজারে এসব ফলের দাম আরো বাড়বে। এনবিআর ও সরকারের ভাষায় এসব নিত্যপণ্য নয় বলে ভোক্তাপর্যায়ে পড়বে না তার প্রভাব। কিন্তু অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা বলছেন ভিন্ন কথা। শুধু আপেল, মাল্টা, আঙুর নয় এনবিআরের প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেই হোটেল-রেস্তোরাঁ, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ওষুধ, কোমল পানীয়, সিগারেটসহ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। এসব পণ্য ও সেবায় ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক (এসডি) বাড়িয়ে দুটি নতুন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ মনে করছেন অপ্রত্যাশিতভাবে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর কারণে এসব পণ্য ও সেবার খরচ বাড়বে; যেমন মোবাইল ফোন সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ফলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়বে। রেস্তোরাঁয় খেতে গেলে খরচ বাড়বে। পোশাক কেনার ক্ষেত্রে যোগ হবে বাড়তি খরচ।
ফলে বাজেটের আগেই এসব পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে। এতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমবে। নতুন করে সংকটে পড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য। ইতিমধ্যে সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করতে শুরু করেছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানো গেলে সবচেয়ে ভালো হতো।
ভ্যাট বৃদ্ধির প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, যে ধরনের পণ্যে ভ্যাট বসানো হয়েছে, সেগুলো একেবারেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য না হলেও এগুলো প্রায় সব সাধারণ মানুষ ব্যবহার করেন; যেমন কাপড়ছোপড়, সাবান, ডিটারজেন্ট, আচার, রেস্তোরাঁয় যাওয়া, মোবাইলফোন ব্যবহার, সিমকার্ড এগুলো সাধারণ মানুষ সবাই ব্যবহার করে। তিনি বলেন ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে এসব পণ্যমূল্য বাড়বেই। এটির একটি চাপ সব মানুষের ওপর আসবে।
যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘ভ্যাট বাড়লেও জিনিসপত্রের দামে প্রভাব পড়বে না। কারণ, অত্যাবশ্যকীয় সব পণ্যের শুল্ক কমিয়ে জিরো (শূন্য) করে দেয়া হয়েছে। মূল্যস্ফীতির মূল ইন্ডিকেটরগুলো হলো চাল, ডাল এগুলো। আর আমরা যেসব জিনিসের ওপর কর বাড়াচ্ছি, এগুলো মূল্যস্ফীতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে খুবই কম গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মনে হয় না কষ্ট হবে।”
অবশ্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই মুহূর্তে ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। ব্যবসায়ী মহলের অনেকেই বলছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজস্ব আয় বাড়ার পরিবর্তে উলটো কমতে পারে। তারা বলছেন, এমনিতেই মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। সেখানে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টম্যাটো কেচাপ বা সস, জুস, টিস্যু পেপার, ফলমূল, সাবান-ডিটারজেন্ট পাউডার, মিষ্টি, চপ্পলের ওপর ভ্যাট হার বৃদ্ধি মানুষকে আরো চাপে ফেলবে।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যবসা-বাণিজ্য খাত বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। এখনো লোকসান কাটিয়ে ওঠা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারের অর্থ দরকার। তাই বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তের ওপর খরচের চাপ কিছুটা বাড়বে। এমনকি অর্থনীতিতে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী পরিচালক ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, এই অবস্থায় ভ্যাট হার বাড়ানো হলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে নিশ্চিতভাবেই। তিনি মনে করেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুচারু গবেষণা ও সুচিন্তিত বিশ্লেষণ ছাড়া ভ্যাট হার বাড়ানো হলে তা অর্থনীতিতে সুফল না-ও আসতে পারে। এমনকি এই সিদ্ধান্তের ফলে অর্থনীতিতে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, যেসব পণ্যের ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে, সেখানে সিগারেট বাদে প্রত্যেকটি পণ্য জীবনমানের সঙ্গে অতি প্রয়োজনীয়। সেক্ষেত্রে এগুলোর দাম বেড়ে গেলে মানুষের জীবনমানের ব্যয় বেড়ে যাবে। তখন মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে রেস্তোরাঁ মালিকরা উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ভ্যাট বাড়ানো হলে ব্যবসায় ভয়াবহ প্রভাব পড়বে। ভ্যাটের সঙ্গে আয়করও বেড়ে যাবে। এতে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি অভিযোগ করেন, ‘ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হোটেল-রেস্তোরাঁকে ধ্বংস করে দিয়ে এই শিল্প করপোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার অপতৎপরতার অংশ এটি।’
এ প্রসঙ্গে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ ব্যবসায় উৎপাদন ও পরিচালনার ব্যয় বাড়াবে, যা শেষ পর্যন্ত পণ্যের মূল্যে প্রতিফলিত হয়ে মুদ্রাস্ফীতিকে ত্বরান্বিত করবে। তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমবে। এতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আমদানি পর্যায়ে যেসব পণ্যে শুল্ক বেড়েছে সুপারি বাদামে ৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪৫ শতাংশ, পাইন বাদামে ২০ থেকে ৩০, তাজা বা শুকনা সুপারিতে ৩০ থেকে বেড়ে ৪৫ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া আম, কমলালেবু, লেবু জাতীয় ফল, আঙুর, লেবু, পেঁপে, তরমুজ, আপেল ও নাশপাতি, ফলের রস, সবজির রস, তামাক, রং, পলিমার, বার্নিশ ও লেকার, সাবান ও সাবান জাতীয় পণ্য, ডিটারজেন্ট, ফ্রুট ড্রিংকস, আর্টিফিশিয়াল বা ফ্লেভার ড্রিংকস ও ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকস (কার্বোনেটেড ও নন-কার্বোনেটেড), তামাকযুক্ত সিগারেট ইত্যাদি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সরবরাহ পর্যায়ে বেড়েছে: যেসব হোটেলে মদ বা মদ জাতীয় পানীয় সরবরাহ করা হয়, সেসব হোটেল বা বারের বিলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রেও একইভাবে মদ বা মদ জাতীয় পণ্য সরবরাহ করা হলে তার বিলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। মোবাইল ফোনের সিমকার্ডের ওপর ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৩ শতাংশ। প্রথম বারের মতো সম্পূরক শুল্ক বসেছে ইন্টারনেট সেবা বা আইএসপির ওপর। এক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দিতে হবে।
ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে যেসব পণ্যে: ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে—পটেটো ফ্ল্যাকস, কর্ন, মেশিনে প্রস্তুত বিস্কুট, হাতে তৈরি বিস্কুট, আচার, চাটনি, টম্যাটো পেস্ট বা টম্যাটো কেচাপ বা সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প, তেঁতুলের পেস্ট, ট্রান্সফরমারের তেল, লুব্রিকেন্ট তেল, এলপি গ্যাস, আমদানি করা বাল্ক পেট্রোলিয়াম বিটুমিন, বিআরটিএ থেকে নেয়া লেমিনেটেড ড্রাইভিং লাইসেন্স, কঠিন শিলা, ফেরো-ম্যাঙ্গানিজ ও ফেরো-সিলিকো ম্যাঙ্গানিজ, ফেরো সিলিকন অ্যালয়, এইচআর কয়েল থেকে সিআর কয়েল, সিআর কয়েল থেকে জিপি শিট, জিআই তার, ৫ কেভিএ থেকে ২ হাজার কেভিএ বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, চশমার প্লাস্টিক ফ্রেম, চশমার মেটাল ফ্রেম, রিডিং গ্লাস, নারিকেলের ছোবড়া থেকে তৈরি ম্যাট্রেসে। এসব পণ্যের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া রেস্তোরাঁর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ, ইনভেন্টিং সংস্থার ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া কিচেন টাওয়াল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু, হ্যান্ড টাওয়াল, সানগ্লাস, নন-এসি হোটেল, মিষ্টান্ন ভা-ার, প্রতিষ্ঠানের কেনাকাটা, নিজস্ব ব্র্যান্ড-সংবলিত তৈরি পোশাকের শোরুম বা বিপণিবিতান এসব পণ্য ও সেবার ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫ শতাংশ। বৈদ্যুতিক খুঁটি, মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ, ডকইয়ার্ড, ছাপাখানা, চলচ্চিত্র স্টুডিও, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী (সিনেমাহল), চলচ্চিত্র পরিবেশক, মেরামত ও সার্ভিসিং, স্বয়ংক্রিয় বা যন্ত্রচালিত করাতকল, খেলাধুলা আয়োজক, পরিবহন ঠিকাদার, বোর্ড সভায় জোগানকারী, টেইলারিং শপ ও টেইলার্স, ভবন রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা, সামাজিক ও খেলাধুলা-বিষয়ক ক্লাব ইত্যাদি সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫ শতাংশ।
ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট: স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ, ওষুধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। তবে এলপি গ্যাসের স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট ২ শতাংশ বাতিল করা হয়েছে।
সিগারেটের ক্ষেত্রে রাজস্ব: অধ্যাদেশে সিগারেটের চার স্তরে দাম ও শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করা হয়েছে। এতে প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। মধ্যম স্তরে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। উচ্চস্তরে ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। অতি উচ্চস্তরের দাম ১৬০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া লাইমস্টোন ও ডলোমাইটে ১০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানেও বাড়ল শুল্ক: ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভারে কর দিতে হয়। নতুন নিয়মে ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা হলে টার্নওভার কর দিতে হতে পারে। বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকা পেরোলে পণ্য ও সেবা বেচাকেনায় ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে। মদের বিলের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া আমদানি, উৎপাদন ও সেবা পর্যায়ে বেশ কিছু পণ্য ও সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে; যেমন—আমদানি পর্যায়ে ফলের রসে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ; তামাকে ৬০ থেকে ১০০ শতাংশ; সুপারিতে ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়েছে।
দাম বাড়বে উড়োজাহাজের টিকিটের এনবিআর বলছে, উড়োজাহাজের টিকিটে কয়েক বছর ধরে বাড়ানো হয়নি আবগারি শুল্ক। বিদেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে নয়, কখনো কর্মের, কখনো ভ্রমণের জন্য যেতে হয়। ফলে বিমান টিকিটে আবগারি শুল্ক বাড়ানো প্রয়োজন। শুধু বাড়ানো নয়, কিছু ক্ষেত্রে যৌক্তিকীকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেজন্য এনবিআরের প্রতিবেদনে ‘দি এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট অ্যাক্ট, ১৯৪৪’-এ সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ রুট ও সার্কভুক্ত দেশের উড়োজাহাজের টিকিটে ৫০০ টাকা হারে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। এটা যৌক্তিকীকরণের জন্য অভ্যন্তরীণ রুটে ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৭০০ টাকা ও সার্কভুক্ত দেশে বর্তমানের দ্বিগুণ ১ হাজার টাকা করা হচ্ছে। এছাড়া এশিয়ার দেশগুলোতে ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে আড়াই হাজার টাকা এবং ইউরোপের দেশগুলোতে ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা করা হচ্ছে। আবগারি শুল্ক বাড়ার ফলে টিকিটের দাম বাড়তে পারে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.