শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও শীতে কাঁপছে দেশ

চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে কম্বল বিতরণ অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় গতকাল বুধবার তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও এতে তাপমাত্রা বাড়লেও উত্তর-পশ্চিম হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল ঠান্ডা কনকনে বাতাসে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে এ জেলায়। তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠা-নামা করছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সকাল সকাল দেখা মিলেছে না সূর্যের। আর হিমশীতল বাতাস বইছে। গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৪ শতাংশ। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে পৌষ মাসের মাঝামাঝি থেকে কনকনে ঠান্ডা ও হালকা কুয়াশায় আবৃত হয়ে পড়েছে চারদিক। শীতার্তরা তীব্র কষ্টে দিন পার করছেন। বর্তমানে রোদের দেখা মিললেও তেমন তাপ নেই। দিনমজুর, চা ও পাথর শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা শীতের তীব্রতায় কাজও করতে পারছেন না। ফলে আয় কমেছে তাদের। এসব কারণে এ জেলার শীতার্ত ও ছিন্নমূল মানুষের রাত কাটে এখন অসহনীয় দুর্ভোগে। শীতের একেকটি রাত যেন তাদের কাছে দুঃস্বপ্ন। অপরদিকে কয়েক দিন ধরে টানা ঠান্ডার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধারা। প্রায়ই সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, বিশেষ করে উত্তর থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ার কারণে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। তবে মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও কমার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে, সারা দেশে ঘন কুয়াশায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে। আগামী তিন দিন মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে। এছাড়াও চলতি মাসে দেশজুড়ে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজকের বুলেটিনে জানানো হয়, সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, শৈত্যপ্রবাহ না এলেও ঘন কুয়াশার জন্য সারাদেশে তাপমাত্রা কমেছে। কুয়াশার কারণে দিনের বেলা শীত আরও বাড়তে পারে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশের জন্য এই তিনদিন রোদের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনাও কম বলে জানান তিনি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী দুইদিন ঘন কুয়াশার জন্য বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন ও সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে। বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ১২ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৬ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিন্নমূল শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে দামুড়হুদার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নৈশপ্রহরী ও ছিন্নমূল শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ মহল শীতার্তদের কম্বল তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি হুমায়ুন কবির, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন, দামুড়হুদা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মেহেদী হাসান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অফিস সহকারী জাকির হোসেন, উপজেলা আইসিটি টেকনিশিয়ান খাইরুল কবীর দিনারসহ মডেল থানার অফিসারবৃন্দ।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায়, দর্শনা পৌর প্রবীন কমিটির উদ্যোগে শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০ টার দিকে দর্শনা পুরাতন বাজারস্থ পৌর প্রবীন কমিটির কার্যালয়ে কম্বল বিতরণ সভার সভাপতিত্ব করেন কমিটির সহ-সভাপতি হাজি ফজলুল হক। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক হাজি আকমত আলী, উপদেষ্টা হাজি খালেকুজ্জামান, হাজি জাহিদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর, বদরুল আলম ফিট্টু, হবিবুর রহমান, সানোয়ার বিশ্বাস প্রমুখ। উপস্থাপনা করেন সাংবাদিক হানিফ মন্ডল।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More