কেএ মান্নান: আলমডাঙ্গার ঘোষবিলায় এক বছর বয়সী শিশু সাদিককে পাচারের অভিযোগে আপন ফুপু রুপা ও তার মেয়ে নুপুরকে আটক করেছে পুলিশ। ফুপাতো বোন নুপুর শিশুটিকে তার মায়ের কোল থেকে নিজের কোলে নিয়েই লাপাত্তা হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাঁশবাগানে অজ্ঞান অবস্থায় ফুপাতো বোন নুপুরের সন্ধান মিললে সে জিন-পরীর আধ্যাত্মিক নাটক উপস্থাপন করায় বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ এ পরিবারের কয়েক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্দেশ্যে থানায় নিয়ে গেছে। শিশু সাদিক আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি ইউনিয়নের ঘোষবিলা গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। শিশুটির মা নাজমা জানান, দুপুর ১টার দিকে ননদের মেয়ে লাকি শিশু সন্তান সাদিককে নিজের কোলে নিয়ে তাকে গোসল করতে পাঠান। গোসল শেষে ফিরে সে লাকির খোঁজ করতে থাকেন মা নাজমা। এ বাড়ি সে বাড়ি খুঁজে কোনো খোঁজ না পেয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ ভাবেই সময় পার হতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ পার হয়ে গেলে আবারও খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এ সময় কেউ কেউ জানায় লাকিকে বাচ্চা কোলে নিয়ে রাস্তায় হেটে যেতে দেখেছে। এক পর্যায়ে বাড়ির পিছনে বাঁশবাগানে চাচাশশুর আলমের নজরে পড়ে যায় নুপুর। নুপুর তার মামা আলমকে দেখেই আকস্মিক কপালে হাত রেখেই মাটিতে ঢলে পড়ে। তার মামার চিৎকারে পরিবার স্বজনরা ছুটে এসে উদ্ধার করে। মাথায় পানি ঢেলে একটু সুস্থ হলে সাদিক কোথায় জানতে চায় সবাই। সে সাদিক’র সম্পর্কে কিছুই জানে না বলে দাবি করে। তুমুল চাপের মুখে সে জানায় তাকে অজ্ঞান করে জিন সাদিককে নিয়ে গেছে। অবশেষে সে জানায় চুয়াডাঙ্গায় বিয়ে হয়েছে ফুপুর মেয়ে অন্তরা (নিঃসন্তান)। অনেকদিন ধরেই মা রুপার কাছে একটি বাচ্চা কিনে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলো। এ ব্যাপারে তাকে অর্থ্যাৎ (নুপুর) প্রলুদ্ধ করে তুলেছিলো। অন্তরা তাকে বলেছে মামা শশুরের ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক শেষে বিয়ে দিয়ে দেবে তাকে। প্রচেষ্টায় নেমে মা রুপার সাথে আকতে থাকে মামার ছেলে সাদিককে পাচারের কৌশল। গতকাল তার মা রুপাকে ওড়নার সাজে ঘর থেকে রাস্তায় গিয়ে দূরে অপেক্ষায় রাখে। অতঃপর শিশু সাদিককে মামির কোল থেকে নিজের কোলে নিয়ে দূরে রাস্তায় অপেক্ষমান মা রুপার কোলে পাচারের জন্যই তুলে দেয়। চাঞ্চল্য এ তথ্য শিহরিত তার মামার বাড়ির স্বজনসহ এলাকাবাসী। পুলিশ এ তথ্যের ভিত্তিতে তার দেয়া ঠিকানায় চালিয়েছে উদ্ধার অভিযান। ফুপু রুপা ও সহযোগী মেয়ে নুপুরসহ নানা আকরাম ও নানী আমেনা থানা কাস্টডিতে নিয়েছে পুলিশ। শিশু সাদিককে উদ্ধারে পুলিশ হন্য হয়ে ঘুরছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.