গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শয্যা সঙ্কট

প্রতিদিনই বাড়ছে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা

স্টাফ রিপোর্টার: গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শয্যা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জ্বর-সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ প্রতিদিনই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি হওয়ায় প্রবেশ পথ, মেঝে, টয়লেটের সামনে এমনকি সিঁড়ির ওপর সেবা নিচ্ছেন রোগীরা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত ১৫ দিনে জ্বর-সর্দি, কাশি নিয়ে ৯৫৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ৩০১ জন, নারী ৩৯৫ ও শিশু রোগীর সংখ্যা ২৫৯। একই সময়ে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে পাঁচ শতাধিক নারী ও শিশু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ায় বৃদ্ধ নারী ও শিশুরা সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। শয্যা সঙ্কটের কারণে মেঝেতে কিংবা সিঁড়ির ওপর-যেখানে জায়গা হচ্ছে সেখানে রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, শয্যা সংখ্যার চেয়ে বেশি হওয়ায় কয়েকজন রোগীকে রাখা হয়েছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের প্রবেশ পথের মেঝেতে। কাউকে সিঁড়ির ওপর আবার কাউকে টয়লেটের প্রবেশ পথে। চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার ঝোরপাড়া গ্রামের ফাকের আলী, নওদাপাড়া গ্রামের জরিনা খাতুন, কামারখালী গ্রামের সুন্দরী খাতুনসহ প্রায় শতাধিক রোগীকে সিঁড়ির নিচে ও ডেঙ্গু ওয়ার্ডের পথে রেখে চিকিৎসা ওেয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ প্রচ- জ্বর নিয়ে, কারও ব্যাপক মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া। হাসপাতালে শয্যা না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই তারা সিঁড়ির ওপর বা টয়লেটের সামনে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এক বছরের শিশু হাদিছা খাতুন, তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন মা রহিমা খাতুন। তিনি জানান, হাদিছার ঠা-া লেগেছে এক সপ্তাহের বেশি হয়েছে। গ্রামের ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করিয়েছেন; কিন্তু কোনো পরিবর্তনে নেই। যে কারণে বুধবার তিনি মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। চিকিৎসকরা বলছেন কয়েকদিন থাকতে হবে। কিন্তু মেয়েকে ভর্তি রাখার জন্য শয্যা পাননি। তাই করিডোরের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালগুলোয় শয্যা সঙ্কটে ভুক্তভোগী অনেকেই। তাদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার জন্য সরকার তাদের শয্যা সংখ্যা বাড়ায় না। চিকিৎসকরা বলছেন, বৈরি আবহাওয়ার কারণে বাচ্চাদের গরম কাপড় পরালে অনেক সময় তাদের বেশি ঘাম হচ্ছে। আবার এ ঘাম শরীরেই শুকিয়ে যাচ্ছে। রাতের বেলায় ফ্যান চালিয়ে রাখলে সেটি আবার ঠা-া হয়ে যাচ্ছে। এতে শিশুরা বেশি ঠা-জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সঙ্কট কিছুটা আছে। তবে শিশুদের পরিবারকে সতর্ক থাকতে হবে। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানান, এখানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বহু রোগী ভর্তি আছেন। তাদের সেবার কোনো কমতি হচ্ছে না। আমাদের শয্যার চেয়ে বেশি রোগী হয়েছে। আরও ভর্তি হচ্ছে। জায়গা নেই, শয্যায় হচ্ছে না-যে কারণে মেঝেতে বা সিঁড়িতে রাখতে বাধ্য হচ্ছি। তবে, ওষুধের কোনো কমতি নেই। আমাদের চিকিৎসক-নার্সরা সবাই রোগীদের সেবায় অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More