স্টাফ রিপোর্টার: আমদানি করা ১০ কোটি টাকার ৩৭০ টন চাল মেহেরপুর সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে গায়েব হয়ে গেছে। সম্প্রতি জেলা পুলিশের রেশনের চাল উত্তোলন করতে গিয়ে বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে খুলনা বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় নির্দেশ দিয়েছে। মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া জেলার তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গেছে। তবে তাদের তদন্তের ফলাফল জানা যায়নি।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড) মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম ও গুদাম কর্মকর্তা কাজি ইমরান হোসেন যোগসাজশ করে ডিও ক্রেতাদের কাছে আমদানি করা চাল বিক্রি করে দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্যগুদামের একজন জানান, কাগজে-কলমে আমদানি করা ৩৭০ টন চাল মজুত আছে। কিন্তু গুদামে ওই চাল এক ছটাকও নেই। সূত্র জানায়, সরকারিভাবে ইউনিয়ন পরিষদ, সামাজিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে চালের ডিও দেয়া হয়। ওই ডিওর বিপরীতে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত চাল দেয়া হয়। আর ওই চালের ডিও কিনে নেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাদের সঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আর্থিক সুবিধা নিয়ে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত চাল না দিয়ে আমদানি করা উন্নতমানের চাল সরবরাহ করেন। চাল ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, গুদামে থাকা সব ধরনের চালের দাম প্রতি টন ২৮ হাজার টাকা। আমদানি করা উন্নতমানের চালের দাম বেশি। এজন্য ডিও ক্রেতারা গুদাম কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করে আমদানি করা চাল উত্তোলন করেন। এতে প্রতি টনে প্রায় ১০ হাজার টাকা লাভ হয়। গুদাম কর্মকর্তা কাজি ইমরান হোসেন জানান, কেউ শত্রুতা করে তার নামে অপপ্রচার করছে। আঞ্চলিক, বিভাগীয় ও ঢাকার তদন্ত কমিটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল গুদামে পেয়েছে। বিভিন্ন ডিওর বিপরীতে ভুল করে আমদানি চালের লট থেকে চাল সরবরাহ করায় আমদানি চাল শূন্য হয়েছে।
মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম হাসান জানান, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গুদামে নির্দিষ্ট পরিমাণ চালই পেয়েছে। তবে আমদানি করা চালের লটে আমন চাল পাওয়া গেছে। গোডাউন থেকে বিভিন্ন ডিওর বিপরীতে আমন চাল সরবরাহ না করে ভুলবশত আমদানি করা চাল সরবরাহ করেছে গুদাম কর্মকর্তা। তবে চালের পরিমাণ ঠিই আছে। তবে বিভাগীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তদন্ত কমিটি খাদ্যগুদামে আমদানি করা চালের হদিস পায়নি।
জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান প্রশিক্ষণে থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে কমিটির অপর দুই সদস্য তদন্ত বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।