বৃষ্টির কারণে ভ্যাপসা গরম থেকে শীতল হাওয়ায় মিলেছে স্বস্তি

চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড়ের আঘাত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। সাথে সামন্য বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতও ছিলো। তবে গরমের তীব্রতা কিছুটা কমায় স্বস্তি মিলেছে এসব এলাকাবাসীর। চুয়াডাঙ্গায় ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো রাজশাহীতে ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো রাজারহাটে ২০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে ৬০ মিলিমিটার।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আজ বুধবারসহ আগামী দু’তিন দিন বৃষ্টি ও কালবৈশাখী চলতে পারে। হঠাৎ বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় বজ্রপাতের পরিমাণও বাড়তে পারে। বিকেলের পর থেকে এ ধরনের আবহাওয়া দেখা যেতে পারে। সেই সঙ্গে আকাশে মেঘের আনাগোনা বাড়তে পারে।

জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বাংলাদেশের আকাশ থেকে সব মেঘ বঙ্গোপসাগরে চলে যায়। এতে দেশে তাপপ্রবাহ বেড়ে গিয়েছিল। তাই এ সময় যে ঝড়–বৃষ্টি হয়, তা কমে আসে। এখন দেশের আকাশে মেঘ আসা বেড়ে গেছে। আর দিনে তাপমাত্রা বেশি থাকছে। এ ধরনের আবহাওয়ায় কালবৈশাখী বাড়ছে। আগামী কয়েক দিন তা আরও বাড়বে। আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে মেঘবৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় সামগ্রিকভাবে তাপমাত্রা কমে আসবে। আর তাপপ্রবাহের দাপটও এতে কমবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরবাড়ি, গাছ পালা ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় ঝড় ও বৃষ্টির কারণে মরসুমি ফল, আম, লিচু, কলা, পেঁপে, ধানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। দামুড়হুদা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কে একটি গাছ ওপরে ও বেশ কয়েকটি গাছের ডাল ভেঙে পড়ে যানচলাচলের বিঘ্ন ঘটেছে কয়েক ঘন্টা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। আর এই ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিলো ১০ থেকে ১৫মিনিট। বৃষ্টির সাথে তুমুল ঝড়ো হাওয়ায় ঘরের, টিন, মরসুমে ফল, গাছ উপড়ে ও ডাল ভেঙে পড়ে বিভিন্ন সড়কে। দামুড়হুদা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কের নাপিতখালী মোড় সংলগ্ন বোস ব্রিকসের সামনে একটি বিশাল বড় গাছ উপড়ে সড়কে পড়ে। এতে কয়েক ঘণ্টা যানচলাচলে বিঘœ ঘটে। ছোট বড় শতাধিক যানবাহনের লম্বা লাইন জমে যায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেখা না মেলায় স্থানীয়রা সড়ক থেকে গাছটি অপসরণের চেষ্টা করছিলো বলে রিপোর্ট লেখা অবদি জানাগেছে। এছাড়াও মরসুমে ফল, আম ও লিচু ঝরে পড়েছে অনেক। বিশেষ করে আমের ক্ষতি হয়েছে বেশি। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে পেঁপে, ধান, ও কলার ও ক্ষতি হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তার সাথে সড়কে গাছ উপড়ে পড়ার বিষয়ে জানতে তার মোবাইলে কল দিলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ঝড়ের কারণে কারো প্রাণহানি ও হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, টানা তাপদাহের পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টিতে সিক্ত হয়েছেন মেহেরপুরবাসী। মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় মেহেরপুরে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির কারণে ভ্যাপসা গরম থেকে শীতল হাওয়ায় স্বস্তি মিলেছে। এর মধ্যে বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে মেহেরপুরে। এ সময় সড়কে সাধারণ মানুষকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তারা ভিজতে শুরু করেন। যদিও মোখাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি হবে বলে জানাচ্ছিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর। মেহেরপুর শহরের হালদারপাড়া এলাকার চাকরিজীবী নাইম রহমান বলেন, টানা গরমে জনজীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছিল। টানা গরমের পর বৃষ্টি হওয়ায় ভালো লাগছে। এতে অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছি। উল্লেখ্য, জেলায় চলতি মে মাসের শুরু থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হয়। বৃষ্টি না থাকায় তীব্র তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে। দিনে দিনে তাপপ্রবাহের মাত্রাও মৃদু থেকে তীব্র হয়। প্রচ- গরমে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে জনজীবন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More