স্টাফ রিপোর্টার: জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, আমি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করবো না। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক টোকিও সফর বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্ব নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি। জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিয়োর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফরে যান ও ২৬ এপ্রিল তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সে বৈঠকের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানাতেই ঢাকার জাপান দূতাবাসে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান সফরের বিষয়ে আলোকপাত করেন রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল জাপান সফর করেছেন। ওই সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। সফরকালে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতাসহ আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বিদ্যমান ব্যাপক সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারত্বে উন্নীত হয়েছে বলে ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সাংবাদিক বাংলাদেশের ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কিমিনোরিকে তার পূর্বসূরি ইতো নাওকির করা মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়, ইতো নাওকি বাংলাদেশের সর্বশেষ নির্বাচনে রাতের আঁধারে ব্যালট বাক্স ভরা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছিলেন, আপনিও কি ওই মন্তব্যকে সমর্থন করেন? জবাবে সদ্য দায়িত্ব নেয়া জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, আমার পূর্বসূরি কী বলেছেন-তা আমার জানা নেই। তবে আমি এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবো। এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে জাপানের কোনো উদ্বেগ আছে কিনা। জবাবে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। এ সময় কিমিনোরি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা জোরদার করবে জাপান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করতেও আগ্রহী জাপান। তবে বিষয়টি এখনো আলোচনার টেবিলে রয়েছে। চীনের বেল্ট-অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) সই করেছে বাংলাদেশ। এখন ইন্দো-প্যাসিফিক উদ্যোগের আওতায় জাপানের সঙ্গে সামরিক কৌশলগত সহযোগিতা সাংঘর্ষিক হবে কি না-জানতে চাইলে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক। ‘চীনের উদ্যোগ সম্পর্কে আমার খুব বেশি জানা নেই। তবে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছি। আমরা আঞ্চলিক কানেকটিভিটি বাড়াতে চাই। অবাধে চলাচলের সুবিধা চাই।’ জাপানের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা শুরু হয়েছে। জাপানি সামরিক জাহাজ বাংলাদেশে এসেছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যেও আমাদের মধ্যে সহযোগিতা প্রয়োজন। রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে গঠিত কোয়াডকে সামরিক জোট হিসেবে অভিহিত করতে নারাজ। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা থাকলেও, এটা কোনো সামরিক জোট নয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ চাইলে জাপানের ‘অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স’ (ওএসএ) প্রকল্প থেকে সহায়তা পেতে পারে।