ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় বেড়েছে ফ্রিজ বিক্রি

তীব্র গরম থেকে মুক্তি পেতে স্বচ্ছলরা কিনছেন এসি

স্টাফ রিপোর্টার: ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় বেড়েছে ফ্রিজ বিক্রি। বিশেষ করে ফ্রিজার বা ডিপ ফ্রিজের চাহিদা বেড়েছে। তবে এসির বিক্রি তুলনামূলক বাড়েনি। এই গরমে খাবার সতেজ রাখতেই ফ্রিজ কিনছেন মানুষ। আর যারা স্বচ্ছল তারা এই তীব্র গরম থেকে মুক্তি পেতে কিনছেন এসি। চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুম ও দোকান ঘুরে দেখা গেছে, গরম ও ঈদের প্রভাবে ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। আর এসির বিক্রি মোটামুটি পর্যায়ে। তবে কোম্পানিগুলো সব শ্রেণির ক্রেতাকে লক্ষ্য রেখে ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাকসহ বিভিন্ন অফার দিচ্ছে। আর এতেই গ্রামের মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে কাস্টমার বেশি পাচ্ছে শোরুমগুলো।

চুয়াডাঙ্গা শহরের ভিশন, ওয়ালটন, সনি-র‌্যাংগস, সিঙ্গার, মার্সেলসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শোরুম ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা যায়, সব দোকানেই মানুষের ভিড় রয়েছে। এসি ও ফ্রিজ কিনছেন মানুষ। তবে অন্যান্য পণ্যও কিনছেন তারা। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ভগিরথপুরের জাহিদ মিয়া বলেন, এই গরমে খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই ফ্রিজ কিনতে আসলাম। যদিও বাসায় ছোট একটা ফ্রিজ আছে। এবার বড়টা কিনতে আসছি। চুয়াডাঙ্গা সদরের সরিষাডাংগা গ্রামের মিতা খাতুন জানান, বাড়ির জন্য ডিপ ফ্রিজ কিনতে আসছি। এই গরমে খাবার রাখতে হবে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি মনে হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়ার বাসিন্দা মামুন অর রশিদ বলেন, এতদিন বাসায় এসির প্রয়োজন না হলেও এবার আর এসি না কিনে থাকতে পারলাম না। দেড় টনের একটি এসি কিনেছি। দাম পড়েছে প্রায় লাখের কাছাকাছি। ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্যের বাজারে গত কয়েক বছর ধরেই নেতৃত্ব দিয়ে আসছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড ওয়ালটন। গরম ও ঈদ উপলক্ষ্যে বিক্রি বেড়েছে ওয়ালটনের ফ্রিজ ও এসির। তুলনামূলক কম দাম হওয়ায় নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত মানুষের পছন্দের তালিকায় এগিয়ে রয়েছে ওয়ালটন। ওয়ালটন-চুয়াডাঙ্গা শোরুমের প্রিন্সিপাল অফিসার ইব্রাহীম খলিল বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতি বছরই বিক্রি বাড়ে। তবে এবার গরম বেশি পড়াই এসির তুলনায় ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে। তবে এসিও বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে ওয়ালটনের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান বলেন, ঈদ সামনে রেখে আমাদের বেশ কিছু নতুন ডিজাইন উন্মোচন করা হয়েছে। সব শ্রেণির ক্রেতাকে টার্গেট করেই আমরা পণ্য বাজারজাত করে থাকি। আর ঈদ উপলক্ষ্যে ও এই গরমে ফ্রিজ এবং এসির বিক্রি বেড়েছে। আশা করছি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। অন্যদিকে দেশের বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই র‌্যাংগস, স্যামসাং, তোশিবা, হিটাচি, প্যানাসনিক, তোশিন ও হাইসেন্স ব্র্যান্ডের ফ্রিজ ও এসির পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গায় সনি র‌্যাংগস ও বেস্ট ইলেকট্রনিক্সের শোরুমে গিয়ে দেখা যায় স্যামসাং, হিটাচিসহ বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের এসি-ফ্রিজের চাহিদা রয়েছে। যদিও এসব ব্র্যান্ডের পণ্যের ক্রেতারা সাধারণত মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত বেশি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মেহেদী হাসান। ঘরে ফ্রিজ থাকা সত্ত্বেও নতুন ডিপ ফ্রিজ কিনেছেন। তিনি বলেন, নতুন ডিপ ফ্রিজ কিনলাম। আসলে ফ্রিজ এখন আর বিলাসি পণ্য নয়, শহুরে জীবনে এটা প্রয়োজনীয় পণ্য। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক বলেন, এসি এই গরমে কিনতেই হলো। এটা আর বিলাসি পণ্যের মধ্যে পড়ে না। তবে দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের মার্সেল শোরুমের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সাব্বির হাসান বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে বাজারে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের বিষয়টি মাথায় রেখে বেশ কয়েকটি ডিপ ফ্রিজ বাজারে এসেছে। তবে এসির কালেকশন ফ্রিজের মতো ওতো না। কারণ এর বিক্রি কম। অন্যবারের তুলনায় ফ্রিজে আমাদের বিক্রি ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাইওয়ান-মিনিস্টার শোরুমের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের বিক্রি বেশ বেড়েছে। এসিও বিক্রি হচ্ছে। তবে ফ্রিজের বিক্রি বেশি। আগামী সপ্তাহের এই বিক্রি আরও বাড়বে বলে মনে করছি। সনি-র‌্যাংগসের সেলস এক্সিকিউটিভ মোহাম্মদ আনীন নাঈম বলেন, গত কয়েকদিনের গরমে এসির বিক্রি অনেক ভালো। এই বিক্রি আরও বাড়বে। ওয়ালটন শোরুমের সিনিয়র সেলস এক্সিকিউটিভ মিস্টার কাওছার বলেন, এখন আমরা প্রতিদিন এসি অর্ডার করছি। এপ্রিলের শুরু থেকে এসির গড় বিক্রি বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা ক্রেতাদের বাড়িতে এসি সংযুক্ত করে দিচ্ছি। ফলে তাদের বাড়তি কোনো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More