চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রুগ্নদশা
জনবল ও পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় রোগীদের ফিরতে হচ্ছে হতাশ হয়ে
দামুড়হুদা অফিস: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। বর্তমানে এটির বেহাল দশা স্বাস্থ্যসেবাকে বাধাগ্রস্ত করছে। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাজনের পর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটির কোনো উন্নয়ন ঘটেনি। একসময় জয়রামপুর গ্রামসহ অত্র অঞ্চলের মানুষরা চিকিৎসাসেবা নিতেন এ কেন্দ্রে। ওই সময় এখানে প্রায় সব ধরনের সেবা মিলতো।
জানা গেছে, ২৫ শতক জমির মধ্যে আট শতক জমিতে ছিলো চার কক্ষবিশিষ্ট পাকা মূল ভবন। দীর্ঘদিনের ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়লে প্রায় ত্রিশ বছর আগে পরিত্যক্ত হয় ভবনটি। পরে ১৭ শতক জমির ওপর ইটের গাঁথুনি ও টিনের ছাউনি দিয়ে দুই কক্ষবিশিষ্ট আধাপাকা ভবন গড়ে তোলা হয়। জনবল চারজন থাকার কথা থাকলেও একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ও অফিস সহায়ক চালাচ্ছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। নতুন ভবন এলাকার তিন পাশে পাঁচিল রয়েছে। তবে সামনের দিকে ফাঁকা, কোনো গেট নেই। ফলে ভবনটি অরক্ষিতই বলা যায়। এর বারান্দায় বাঁশের রেলিং ও তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। ভবনের চারপাশটা ঝোপঝাড়ে ভরা। এখানে প্রতিদিন ৭০-১০০ জন টিকিটের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। এখানে একজন মেডিক্যাল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ও একজন অফিস সহায়ক থাকার কথা। অথচ দীর্ঘদিন ধরে দুজন মিলে কোনোরকমে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব আলী স্বপন ও শেখ সামসুল আলম বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি একসময় খুবই ব্যস্ত ছিলো। এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পরিসেবার একমাত্র অবলম্বন ছিলো। পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের মতো প্রায় সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা পেতেন সাধারণ মানুষ। বর্তমানে রোগীর বিশাল চাপ রয়েছে। কিন্তু জনবল ও পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় অসহায়-অস্বচ্ছল রোগীদের হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে। উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভবন নির্মাণ ও এতে জনবল নিয়োগ দিয়ে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার শামিম আহম্মদ বলেন, ভবনের টিনের ছাউনি ফুটো হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ভেসে যায়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাখতে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া এখানে প্রতিদিন গড়ে ১০০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। জনবল-ওষুধ সরবরাহ পর্যাপ্ত না থাকায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। সবকিছু জানতে পারিনি। তবে কিছুটা জেনেছি। দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।