অনলাইন জুয়ার সেকেন্ডম্যান মেহেরপুরের যুবকসহ তিন জুয়াড়ি গ্রেফতার
রাজধানী ঢাকায় মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান
মেহেরপুর অফিস: বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার সেকেন্ডম্যান হিসেবে পরিচিত নাহিদ অনিককে (২২) দুই সহযোগীসহ আটক করেছে পুলিশ। মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ঢাকা থেকে রোববার রাতে তাদেরকে আটক করে মেহেরপুরে নিয়ে এসেছে। আটক অনিক নাহিদ মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের মাদার আলীর ছেলে। নাহিদের দুই সহযোগী হচ্ছে কোমরপুর গ্রামের মোস্তাকিন আলীর ছেলে মেহেদি হাসিব (২২) ও মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে মুশফিকুর রহমান রিমোট (২৩)।
মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ বিদেশি জুয়ার রমরমা কারবার চলে আসছে। বিশেষ করে রাশিয়ার ওয়ান এক্স বেট ও মেইলবেট বাংলাদেশে যারা পরিচালনা করে তাদের মধ্যে সেকেন্ডম্যান হচ্ছে নাহিদ অনিক। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে তাদের অনলাইন জুয়া খেলা পরিচালনা করে। এই অনলাইন জুয়ার সাইটের মাধ্যমে রাশিয়ার পাচার হচ্ছে দেশের হাজার কোটি টাকা। ডিবি ওসি বলেন, গেল এক বছর মেহেরপুর জেলায় বিভিন্ন পর্যায়ের অনলাইন জুয়াড়ি আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এদের মধ্যে জুয়াড়ি, জুয়ার এজেন্ট রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আটক হওয়া আসামিদের দেয়া তথ্যনুযায়ী অনলাইন জুয়া পরিচালনাকারীদের আটকের চেষ্টা করছিলো পুলিশ। মেহেরপুর জেলায় জুয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলার অন্যতম আসামি হয় নাহিদ অনিক। মামলার কারণে পরিচয় ও অবস্থান বদল করে জুয়া পরিচালনা করতে থাকে নাহিদ অনিক। এক পর্যায়ে রাজধানীর মিরপুর-২ এলাকার একটি আবাসিক ভবনে রোববার অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় অনিকের ডিজিটাল ডিভাইস থেকে থেকে দুটি এবং হাসিবের কাছে থেকে একটি অনলাইন জুয়ার চ্যানেলসহ তাদেরকে হাতেনাতে আটক করা হয়। অনিকের কাছে দুটি অনলাইন চ্যানেলের মধ্যে একটি তার নামে এবং অপরটি তার পিতা মাদারের নামে রয়েছে। প্রতিটি চ্যানেলে গড়ে প্রতিদিন কমিশন আসে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।
পুলিশ আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, মেহেরপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে ২০টি চ্যানেল দেয়া আছে। যেগুলো সিম সরবরাহ করে অনিকের পিতা মাদার আলী। আর এগুলো সব নিয়ন্ত্রণ করে অনিক নিজে।
পুলিশ জানায়, অনিকের অনুমোদন ছাড়া কাউকে এ চ্যানেল দেয়া হয় না। এ জন্য অনিক পেয়ে থাকেন চ্যানেলের ৮ শতাংশ। এভাবে মেহেপুরের দুই শতাধিক তরুণ ও বিভিন্ন বয়সের মানুষকে তারা অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িয়েছে। এদিকে আটক তিনজনকে অনলাইন জুয়ার মামলায় মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।