ট্রাক ফেলে পালিয়েছেন চালকরা : ৩ হেলপার গ্রেফতার
চুয়াডাঙ্গায় গমের ট্রাকে বালুর বস্তা আসার ঘটনায় মামলা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার খাদ্য গুদামে গমের ট্রাকে বালুর বস্তা পাওয়ার ঘটনায় ৩ টন ৭৭১ কেজি গম কম পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে তিন ট্রাক হেলপারকে আটক দেখিয়েছে পুলিশ। তবে পালিয়ে গেছে ৬ ট্রাকের চালক ও হেলপাররা। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রোববার রাতে খাদ্য গুদামে ট্রাক ফেলে চালক ও হেলপাররা পালিয়েছে। তবে তিন হেলপার পালাতে না পারায় তাদেরকে আটক দেখানো হয়েছে। হেফাজতে নেয়া হয়েছে ৬টি ট্রাক। এ ঘটনায় খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে জেলা খাদ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা শুরু করেছেন তদন্ত কাজ। গতকাল সোমবার বিকেলে তদন্ত কমিটির সদস্য চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেন। কথা বলেন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। জিজ্ঞাসাবাদ করেন ট্রাকের হেলপারদের। এসময় তিন ট্রাক হেলপারকে আটকের নির্দেশ দেয়া হয়। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা এ তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাক চালক-হেলপাররা এ কারসাজিতে জড়িত। তবে তদন্তের পর বিষয়টি জানানো হবে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ছয়টি গাড়ির চালক ও চালকের সহকারীরা যোগসাজশ করে গমভর্তি বস্তা সরিয়ে গাড়ির গোপন স্থানে পরিমাণমতো বালুর বস্তা ও কংক্রিট লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বিচক্ষণতায় তা বের হয়ে আসে।
তদন্ত দলের সদস্য নাসরিন বানু বলেন, ‘তিনটি গাড়ি খালাস করে প্রতিটিতেই গমের পরিমাণ কম পাওয়া গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাকি তিনটিতেও কম পাওয়া যাবে। চালক ও সহকারীদের উপস্থিতিতে ট্রাকগুলো খালাসের প্রয়োজন। কিন্তু সোমবার সকাল থেকে এসব চালক ও সহকারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ৬টা ট্রাক থেকে সব গম নামানো হয়েছে। এর মধ্যে ৩টন ৭৭১ কেজি গম কম পাওয়া গেছে। আর ওই ট্রাক থেকে উদ্ধার করা বালুর পরিমাণ এক হাজার ৪৮৮ কেজি। গত রোববার খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গা খাদ্য গুদামে এসে পৌঁছায় গমভর্তি ৬টি ট্রাক। ওই ট্রাক থেকে গম নামানোর সময় ২৮ বস্তা বালু ও ৪ টুকরো পাথর পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, সন্দেহভাজন চালক ও সহকারীদের রাতে একটি ঘরে নজরদারিতে রাখা হয়েছিলো। সকালে চা খাওয়ার কথা বলে বের হয়ে তারা আর ফিরে আসেননি। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গাড়ি থেকে গম খালাসের সময় আলাদাভাবে ওজন করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন চালক ও সহকারীরা পালিয়ে গেলেও সমস্যা হবে না। গাড়ির মালিকদের মাধ্যমে তাদের ধরে আনা হবে।’