রতন বিশ্বাস: খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। এ দিনটি খ্রিস্টানদের জীবনে বয়ে আনে অনাবিল ভালোবাসা ও সৌহাদ্য ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পরিবেশ। যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে বয়ে যায় খুশির বন্যা। এ দিনটি ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও যথাযথ মর্যাদার সাথে পালনের লক্ষ্যে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের অন্তর্গত কার্পাসডাঙ্গা মিশন ও বাঘাডাঙ্গায় কয়েকশ খ্রিস্টান বসতি গড়ে ওঠে তা জানা না গেলও দীর্ঘদিন ধরেই তারা এ অঞ্চলে বসবাস করছেন। এখানে দুই গ্রামে প্রায় আড়াই হাজার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বসবাস। তারা প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর এলেই মেতে ওঠে বড়দিন উৎসব করার জন্য। চার্চ অব বাংলাদশ, ক্যাথলিক ও এজি ৩টি অনুসারী রয়েছে এখানে। এলাকাঘুরে দেখা যায়, বড়দিন আগমন উপলক্ষে ব্যস্ত রয়েছে রং বেরংয়ের পোষাক তৈরীতে তেমনিভাবে ঘরদোর সাজানো, বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ছাড়াও নির্মাণ করা হচ্ছে রং বেরংয়ের তোরণ। কার্পাসডাঙ্গা বাজারের পোষাকের দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে উপচেপড়া ভিড়। নারী-পুরুষ সকলের আগমন এখন বাজারে। যারা কার্পাসডাঙ্গার বাইরে অর্থাৎ শহরে থাকে তারা আসতে শুরু করছে আপনজনদের কাছে। গীর্জাগুলোতে করা হচ্ছে ব্যাপক আলোকসজ্জা। সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান হচ্ছে গোশালা ঘর। যেখানে দুহাজার বছর আগে জন্ম নিয়েছিলো যীশুখ্রিস্ট। যুবকরা বাঁশ-কাবারী ও বিচালি দিয়ে গোশালা তৈরী করতে শুরু করে দিয়েছে। তাছাড়া মা মারিয়ার আবাসস্থলটি তৈরী করা হয়েছে পাথরের টুকরো দিয়ে। সাজানো হয়েছে নানা রঙ্গ। এদিকে ২৪ তারিখ সারাদিন খ্রিস্টানদের ঘরে ঘরে শুরু হয় নানা রকমের পিঠা তৈরীর ধুম। এদিন সন্ধ্যার পর যুবক ছেলেরা সারারাত জেগে আনন্দ উল্লাস করে এই রাতকে জাগনি রাত বলা হয় । ২৪ তারিখ রাত ১২টার পরে কেক কেটে যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন পালন করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। সব মিলিয়ে খ্রিস্টান পল্লীর গোটা এলাকায় বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। বড়দিন প্রস্তুতি সম্পর্কে কার্পাসডাঙ্গা ক্যাথলিক গির্জার ফাদার লাভলু সরকার জানান, প্রতি বছরের মত এবারও বড়দিন পালন করবো আশা করছি। গ্রামে আলোকসজ্জা করেছে স্থানীয়রা। আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সবসময় সরকার আমাদের পাশে থাকে। পুলিশ প্রশাসন বড়দিনের সময় বাড়তি নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। কার্পাসডাঙ্গা ফাঁড়ির আইসি এসআই ইমরান হোসেন জানান, শুভ বড়দনি উৎযাপন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষজন যাতে ভালোভাবে বড়দিন উদযাপন করতে পারে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ থাকবে।