চুয়াডাঙ্গায় সরকারি বিদ্যালয়ে সন্তানের ভর্তি নিশ্চিতে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে চাতুরতার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সন্তানের ভর্তি নিশ্চিতে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। অভিযোগে জানা গেছে, একজন শিক্ষার্থীর নামে একাধিক জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদেরকে ভর্তিযুদ্ধের লটারিতে নাম লিখিয়েছিলেন। অভিভাবকদের এমন চাতুরতার বিষয়টি এখন চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে চাওর হয়েছে। এতে একজন পরীক্ষার্থীর নাম একাধিকবার লটারিতে ওঠায় বাদ যাচ্ছে অন্য শিক্ষার্থীরা। শিশুদের পরীক্ষা থেকে মানসিক চাপমুক্ত রাখতে ভর্তির ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক পরীক্ষা বাদ রেখে সরকারি উদ্যোগে ব্যবহার করা হচ্ছে রেনডম সিলেকশন লটারি পদ্ধতি। কিন্তু সে উদ্যোগ এখন বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। লটারির মাধ্যমে ফলাফল ঘোষিত হবার পর চুয়াডাঙ্গার দুটি সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১৮ ডিসেম্বর থেকে। লটারি মাধ্যমে নির্বাচিত দুটি বিদ্যালয়ের ৪৮০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে ১৮২ জন শিক্ষার্থীর। এই ১৮২ জন শিক্ষার্থী তথ্য গোপন করে একাধিক নামে ভর্তি লটারিতে অংশগ্রহণ করেছিলো।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দিল আরা চৌধুরী জানান, গত ১৪ ডিসেম্বর লিখিত একটি চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিদ্যালয়ে লটারিতে ভর্তির জন্য মনোনীত ২৪০ জন শিক্ষার্থীর তথ্যগত কোনো ত্রুটি আছে কি-না বা একাধিক আবেদন করা আছে কি-না সেটি যাচাই-বাছাই করা হয়। সেটি যাচাই-বাছাই শেষে আমরা ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১৬৬ জন মেরিট লিস্টে থাকা শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর আরেকটি চিঠিতে নির্দেশনা দেয়া হয় ভর্তিযুদ্ধে যত শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিলো সকল শিক্ষার্থীর তথ্য যাচাই-বাছাই করতে হবে। সে অনুযায়ী গত মঙ্গলবার রাত দুইটা পর্যন্ত আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অভিভাবকদের এ ধরনের চাতুরতার আশ্রয় নিয়ে তার সন্তানদেরকে ভর্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ এ ধরণের চাতুরতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একই সাথে যারা তথ্য গোপন করে অভিভাবকদের কল্যাণে ভর্তির লটারিতে নাম উঠিয়েছে তারা এখন ভর্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আশাহত হচ্ছে এটা মেনে নেয়া বেশ কষ্টকর। যা কাক্সিক্ষত ছিলো না।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা ভিক্টরি জুবলী হাইস্কুল (ভি.জে) স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন জানান, আমার বিদ্যালয়েও একই রকম সরকারি নির্দেশনা আসায় আমিও ভর্তিচ্ছুক বা মেরিট লিস্টে নাম আসা শিক্ষার্থীদের তথ্য যাচাই বাছাই করেছি। গতকাল বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত মেরিট লিস্টে থাকা আমার বিদ্যালয় ১৪৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, যারা তথ্য গোপন করে একাধিকবার একাধিক নামে ভর্তিযুদ্ধে লটারিতে অংশগ্রহণ করেছে এমন নির্বাচিতদের কোনোভাবেই ভর্তির সুযোগ দেয়া হবে না। চুয়াডাঙ্গা শহরের দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দুই শিফট মিলে বিদ্যালয় দুটিতে এ বছর ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলো ৪ হাজার ৩১৮ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ভিক্টোরিয়া জুবলী হাইস্কুলে ২ হাজার ১৪৫ জন ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ২১৭৩ জন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More