স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘১০ তারিখে (ডিসেম্বর) আমরা বাধা দিতে চাই না। বিএনপি সমাবেশ করুক শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এটাই আমরা চাই। তবে আগুন আর লাঠি নিয়ে এলে খেলা হবে। আপনারা আগুন আর লাঠি নিয়ে এলে আমাদের নেতারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ চুষবেন এটা হবে না।’ গতকাল সোমবার বিকেলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। জামালপুর জিলা স্কুল মাঠে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর আমরাও প্রস্তুত আছি। খেলা হবে। সামনের সারিতে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন।’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ফখরুল কী বলে জানেন, ১০ তারিখে তিনি নাকি হ্যামিলিনের বংশীবাদকের মতো বাঁশিতে ফুঁ দেবেন, এতেই নাকি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এ সরকারের পতন হবে!’ মঞ্চের সামনে থাকা নেতা-কর্মীদের তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ‘শুনছেন এই কথা?’ এরপর ফখরুল ইসলামের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, হ্যামিলিনের বংশীবাদকের মতো আপনারাও কি ঢাকাবাসীকে নদীতে ডুবিয়ে রাখবেন, নাকি কোনো পাহাড়ে নিয়ে আটকে রাখবেন?’ আরেকবার শেখ হাসিনার সরকার দরকার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর রাজনীতিতে শেখ হাসিনার মতো ভালো মানুষ আর দেখি নাই। ১৯৭৫ সালের পর তার (শেখ হাসিনা) মতো সাহসী নেত্রী আর দেখি নাই। তার মতো জনপ্রিয় আরেকজন মানুষ আমরা দেখি নাই। তার সঙ্গে আপনারা আছেন তো?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন এবং স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছেন, শেখ হাসিনা এটা জানেন। সারাবিশ্বই বিপদে আছে। তাই আমরাও বিপদে আছি। তাদের সংকট আমাদের শাস্তি দিচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা আর যুদ্ধ, সব উনারা করেন, আর আমরা কষ্ট পাচ্ছি। তারপরও আমরা সামাল দিয়ে যাচ্ছি। মানুষের কথা চিন্তা করেন বলেই শেখ হাসিনা মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা ঘুমান, দিন-রাত মানুষের জন্য কাজ করেন।’
এর আগে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহর সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও শফিউল আলম চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সদস্য মারুফা আক্তার ও রেমন্ড আরেং। সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী।
প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের বক্তব্যের শেষে মঞ্চে দাঁড়িয়ে জেলা আওয়ামী লীগের পুরোনো কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। এর দু-এক মিনিট পরে নতুন কমিটির শীর্ষ তিন পদের নাম ঘোষণা করেন। তিন বছরের জন্য পুনরায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোনীত হয়েছেন মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বিজন কুমার চন্দ। বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরীকে সহসভাপতি করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালের ২০ মে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। প্রায় সাড়ে সাত বছর পর গতকাল সম্মেলন হয়েছে।