সড়ক নিরাপদ করতে সকলকেই সজাগ হওয়া প্রয়োজন
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক বৈঠকে জেলা প্রশাসক
স্টাফ রিপোর্টার: সম্মিলিতভাবে চুয়াডাঙ্গা জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেছেন, বাল্য বিয়ে রোধে সামাজিক যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে তা ধরে রাখতে দায়িত্বশীলদের আরও কর্তব্যপরায়ন হতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ওভার ড্রাইভ, ওভার লোড, ওভার টেকিং যেমন পরিহার প্রয়োজন, তেমনই দরকার পথচারীদেরও সতর্ক হওয়া। মোটরবাইক চালকদের অবশ্যই আইন মেনে হেলমেট পরতে হবে। সড়ক নিরাপদ করতে সকলকেই সজাগ হওয়া প্রয়োজন।
গতকাল রোববার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাত হোসেন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার আকরাম হোসেন দোলন, সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এসএম ইস্রাফিল, জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, ভিক্টোরিয়া জুবলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিশেষ পিপি আবু তালেব, জেলা আওয়ামী লীগের উপ প্রচার সম্পাদক শওকত মাহমুদ, জেলা জাসদ সেক্রেটারি অ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতন, জেলা কাজী সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম প্রমুখ।
জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিগত দিনের কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আরাফাত রহমান। সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের প্রেক্ষিতে সভার সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কার্যক্রম গতিশিল হয়েছে। পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক নতুন এসেছেন। তিনি বিগত দিনের সব অনিয়ম দূর করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সহজে যাতে পাসপোর্ট নিতে পারে তা নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ^াস করি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পরিবেশ আরও উন্নতি করার পাশাপাশি চিকিৎসার মান বৃদ্ধিতে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। সিভিল সার্জন মহাদয় এ বিষয়ে আন্তরিক হলে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের দূর্ভোগ বহুলাংশেই হ্রাস পাবে। আসন্ন বিশ^কাপ ফুটবল নিয়ে উম্মাদনায় মাতলেও উত্তিজিত হয়ে হিংসায় না জড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেছেন, খেলায় বিদেশের সমর্থন করতে গিয়ে দেশের জাতীয় পতাকার মর্যদাহানী করা চলবে না। বিদেশের পতাকা তুলতে হলে অবশ্যই নিয়ম মানতে হবে। এছাড়া মাইকের অপব্যহারও বন্ধ করতে হবে। ওয়াজ মাহফিলের জন্য যেমন অনুমোদন নিতে হবে, তেমনই ধর্মসভা স্থলের মধ্যে যাতে শব্দ সীমিত থাকে তা নিশ্চিত করতে সাউন্ডবক্স রাখতে হবে। উচ্চস্বরে অনেক রাতপর্যন্ত মাইক ব্যবহারের বৈধতা নেই। জেলা শহরের প্রধান সড়ক শহীদ আবুল কাশেম সড়কের ধারে অবৈধভাবে ট্রাক রাখা বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ অবশ্যই নেয়া হবে। তাছাড়া আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেহেতু চলমান পক্রিয়া। আমরা সম্মিলিতভাবে এ দিকে বিশেষ নজর রাখলে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে বলে আমরা বিশ^াস করি।
সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে জেলা পুলিশের সকল সদস্য সর্বদা সজাগ রয়েছে। নিষ্ঠার সাথে দায়িত্বপালন করছে। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এসব হ্রাসে সমাজের সচেতনমহলকে সামাজিক দায়িত্বপালনে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। পুলিশ সব সময় সমাজের সচেতন মহলের সহযোগিতা কামনা করেন। সাধারণ মানুষ পুলিশের পাশে সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে রয়েছেন। আমরা চাই আরও সহযোগিতা। পুলিশ জনগণের বন্ধু। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বদ্ধ পরিকর।
সভায় সিভিল সার্জন বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার স্বাস্ব্য বিভাগ জনগণের সবায় নিয়োজিত রয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ পথ্যও রয়েছে। যথাযথভাবে চিকিৎসা নিশ্চিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন জেলায় নিয়োজিত চিকিৎসকেরা।