মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর সদর উপজেলার সুবিদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী ও অভিযোগকারীদের দাবি বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক সরকারি বিধি মোতাবেক শূন্যপদে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক, একজন ল্যাব সহকারী, একজন নিরাপত্তা প্রহরী, একজন আয়া ও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগে অনিয়ম করছেন। আত্মীয়করণ ও টাকার বিনিময়ে এসব পদে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। নিয়োগ প্রক্রিয়া বতিল করে নতুনভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ারও দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে লোক নিয়োগ করা হবে। এ ব্যাপারে ‘বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। উক্ত পদসমূহে মোট ১৬ প্রার্থী আবেদন করেছেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার কাছে কোনো ডকুমেন্ট নাই। আমার সাথে রেজুলেশনে সই করে প্রধান শিক্ষক সব নিয়ে গেছে। ডকুমেন্ট সব প্রধান শিক্ষকের কাছে আছে।
প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলামকে স্কুলে না পেয়ে দুপুরের দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে মিটিংয়ে আছি। সাংবাদিকরা সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলে এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের সামনে পড়েন তিনি। এসময় সাংবাদিকরা নিয়োগ সংক্রান্ত প্রশ্ন করতেই তিনি উগ্র মেজাজে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। স্কুলের সভাপতি আরিফুল ইসলাম এসব জানেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আপনারা বুঝতে পারছেন না কিভাবে নিয়োগ হয়। এরপর তিনি তড়িঘড়ি করে চলে যান।
এদিকে একই সময়ে মুঠোফোনে বিদ্যালয়ের সভাপতি ৮নং ওয়ার্ডের (সুবিদপুর) মেম্বার প্রধান শিক্ষকের চাচাতো ভাই আরিফুল ইসলামের সাথে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। আমাকে শুধুমাত্র সভাপতি করে রেখেছে। সবকিছু জানেন প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় আবারো প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তখন তার ব্যাগে থাকা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসহ আবেদনের তালিকা দেখান। নিয়োগের ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির নামে যে অভিযোগ উঠেছে তা জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাহাবুল ইসলাম জানান, কিছু দুষ্টু প্রকৃতির লোক আমাদের নামে মিথ্যা রটাচ্ছেন। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কারো কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা নেয়া হয়নি। এটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
স্কুলের সভাপতি আরিফুল ইসলাম জানান, ভালো কাজ করলে অনেকের মাথাব্যথা হয়। আমাদের কোনো শত্রু নেই। আমরা কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। নিয়োগ প্রক্রিয়া সরকারি বিধি মোতাবেক হবে। এখানে যোগ্য লোকের মূল্যায়ন করা হবে।
এদিকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন বলেন, সুবিদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থা না থাকলে নিয়োগ প্রাক্রিয়া বাতিল করা হবে। এছাড়া শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনোপ্রকার অর্থিক লেনদেনের সুযোগ নেই। যদি কেউ এ ধরনের পথ অবলম্বন করে থাকে তাহলে সেটি অবৈধ।